• জাতীয়

    তালিকা হচ্ছে গডফাদারদের

      প্রতিনিধি ২৮ মার্চ ২০২৪ , ৬:১১:৫৮ প্রিন্ট সংস্করণ

    নীলাকাশ টুডে

     

    কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে এবার গ্যাং লিডার বা পৃষ্ঠপোষকদের গ্রেফতারে মাঠে নামছে পুলিশ। ইতোমধ্যে তাদের নাম ও রাজনৈতিক পদ-পদবিসহ বিস্তারিত পরিচয় চেয়ে বিভিন্ন থানায় চিঠি দিয়েছে ডিএমপি (ঢাকা মহানগর পুলিশ)। এতে এলাকা ভিত্তিক বিভিন্ন কিশোর গ্যাং সদস্যদের তালিকাও হালনাগাদ করতে বলা হয়েছে।

    পুলিশ বলছে, সম্প্রতি রাজধানীতে বেশ কয়েকটি খুনের ঘটনায় একাধিক কিশোর গ্যাংয়ের সম্পৃক্ততা মিলেছে। এছাড়া এলাকাভিত্তিক চাঁদাবাজি, জমিদখল, আধিপত্য বিস্তারে একাধিক গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি বা সংঘর্ষের মতো ঘটনা ঘটছে অহরহ। এমনকি ইভটিজিং বা প্রেমঘটিত কারণেও কিশোরদের অনেকে হত্যার মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এতে রাজধানীর অপরাধ পরিস্থিতি দিন দিন আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে।

    সূত্র জানায়, চলতি মাসে ডিএমপির একাধিক সভায় কিশোর গ্যাং নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। এতে কিশোর গ্যাংয়ের মদদদাতা বা পৃষ্ঠপোষকদের আইনের আওতায় আনার সুপারিশ করা হয়। পরে ২০ মার্চ ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) লিটন কুমার সাহা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বিভিন্ন থানা এলাকায় সক্রিয় কিশোর গ্যাং ও তাদের পৃষ্ঠপোষক বা গডফাদারদের নাম পাঠাতে বলা হয়েছে।

    নির্দেশনা অনুযায়ী ডিএমপির নির্ধারিত মেইলে বা বিশেষ বাহকের মাধ্যমে তালিকা পাঠাতে হবে। এজন্য মার্চের ২৭ তারিখ পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত ছকে মোট ৮ ধরনের তথ্য জানাতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে সংশ্লিষ্ট থানা এলাকায় সক্রিয় গ্যাং লিডার ও গ্যাংয়ের নাম, অপরাধের স্পট, পৃষ্ঠপোষক বা বড় ভাই, সদস্য সংখ্যা, নাম, অপরাধের ধরন এবং মামলা ও জিডির পরিসংখ্যান। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ডিএমপির নয় বিভাগের ডিসিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

    এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ গণমাধ্যমকে বলেন, যে কোনো মূল্যে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণ করা হবে। বিশেষ করে যারা কিশোর গ্যাং লালন-পালন করেন অর্থাৎ যারা গডফাদার তাদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে পুলিশ। ইতোমধ্যে অনেকের নাম পাওয়া গেছে। শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে প্রভাবশালী বা অন্য কোনো পরিচয়ে কেউ ছাড় পাবে না।

    সূত্র জানায়, কিশোর গ্যাংয়ের গডফাদার হিসাবে ইতোমধ্যে রাজধানীর বেশ কয়েকজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সরকারদলীয় নেতাকর্মীর ওপর নজর রাখছে পুলিশ।

     

     

     

     

    স্থানীয় থানা পুলিশ বলছে, কিশোর গ্যাং লালন-পালনে সাবেক এক এমপির আশ্রয়-প্রশ্রয় থাকলেও এলাকার নবনির্বাচিত এমপি খসরু চৌধুরী এর বিরুদ্ধে সোচ্চার। সম্প্রতি তিনি সংবাদ সম্মেলন করে কিশোর গ্যাং থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে বলেছেন। এমনকি নেতাকর্মীদের কেউ কিশোর গ্যাংয়ে জড়িত হলে তাকে ধরিয়ে দেওয়া হবে বলে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

    পুলিশ জানায়, উত্তরা ছাড়াও মিরপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় কিশোর অপরাধ দিন দিন আরও বাড়ছে। বিশেষ করে পল্লবী এলাকায় চুরি-ছিনতাই ছাড়াও কিশোর গ্যাংয়ের হাতে একের পর এক ঘটছে হত্যাকাণ্ড। সর্বশেষ তুচ্ছ ঘটনার জেরে ১৫ মার্চ খুন হন পল্লবী মুড়াপাড়া ক্যাম্পের বাসিন্দা মোহাম্মদ ফয়সাল। ইতোমধ্যে এ ঘটনায় জড়িত স্থানীয় কিশোর গ্যাং লিডার গলা কাটা রাব্বি ও টানা আকাশসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এছাড়া বাট্টু নামের অপর এক কিশোর গ্যাং লিডারকে গ্রেফতার করেছে পল্লবী থানা পুলিশ।

     

    আরও খবর

    Sponsered content