রাজনীতি

নির্বাচনী সহিংসতায় আহত ২০, অবরুদ্ধ ১০ পরিবার

  প্রতিনিধি ১৭ জুন ২০২২ , ২:০৫:১৪ প্রিন্ট সংস্করণ

 

নীলাকাশ টুডেঃ শরীয়তপুরের সদর উপজেলার চিতলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থক ও বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী সমর্থকদের মধ্যে পালটাপালটি হামলার ঘটনায় ২০টি বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাংচুর ও লুটপাট হয়েছে। ১০টি পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে।

হামলায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।

বিচারের দাবিতে এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তার সমর্থকরা। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এদিকে পুলিশ বলছে দুই গ্রুপকে মুখোমুখি হতে দিচ্ছে না।

পুলিশ ও চিতলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার সফিকুল ইসলাম ও বিমা কর্মী ফেরদাউস সরদার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিতলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম হাওলাদার (আনারস) ও শরীয়তপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হারুন অর রশিদ হাওলাদার (ঘোড়া) মার্কা নিয়ে নির্বাচন করেন। সেখানে আব্দুস সালাম হাওলাদার বিজয়ী হন।

বিজয়ী হওয়ার পর থেকে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থক ৮নং ওয়ার্ডের চিতলিয়া পশ্চিমপাড় এলাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যালয়, তাজুল সরদারের ২টি, নাছির হাওলাদারের ১টি, জিয়াউল খাঁর ১টি, আজিজুল বেপারীর ১টি ও বোরহান চৌকিদারের ১টি ঘর ও সলিশ মল্লিক, হানিফ হাওলাদার ও শাজাহান সরদারের কাপড়ের দোকান, মোশারফের চায়ের দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে।

এ সময় বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় মো. জাহিদ হোসেন (১২), করিম মিয়া (৩০), লিয়াকত (৪০), পুতুল আক্তারসহ (২০) ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

বিজয়ী চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম হাওলাদারের সমর্থকরা একই গ্রামের জয়নাল মোল্লা, ফজল হক মোল্লা, মোক্তার মোল্লা, নাছির হাওলাদার, হায়দার খাঁ, সায়েদ খাঁসহ ১০টি পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রাখে। বিচারের দাবিতে এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তার সমর্থকরা।

অপরদিকে শুক্রবার দুপুরে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরা চিতলিয়া মোল্লা বাড়ির মোড়ে বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়ে হানিফ সরদার (৩০), ইমাম হোসেন সরদার (৪০), ওসমান ঢালী (৩৮), কামাল হাওলাদার (৩৫), আয়ন হাওলাদার (৪০), রাশেদ হাওলাদার (৪০), ছোহরাব হাওলাদার (৫০), সাওন হাওলাদারকে (৩০) কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

শরীয়তপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী হারুন অর রশিদ হাওলাদার বলেন, আমরা কোনো হামলা করিনি। বরং আমার সমর্থকদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাংচুর লুটপাট ও অবরুদ্ধ করে রাখে। অনেকে আমার বাড়িতে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। এর প্রতিবাদে আমরা বিক্ষোভ মিছিল করেছি।

চিতলিয়া ইউনিয়নের পশ্চিমপাড় এলাকার কাকলী আক্তার, সায়েদ খান বলেন, নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকে বিজয়ী চেয়ারম্যান সালাম হাওলাদারের লোকজন মো. আলী সরদার, নান্নু খা, লিটন খাঁ গংরা আমাদেরকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। আমরা ঘর থেকে বের হতে পারছি না। বাড়ি থেকে আমার চাচাতো ভাই জাহিদ খান বের হলে তাকেই মারধর করে।

ব্যবসায়ী সলিম মল্লিক ও হানিফ হাওলাদার বলেন, আমরা নির্বাচনে হারুন হাওলাদারের সমর্থন করায় নির্বাচনের পরে সালাম হাওলাদারের সমর্থকরা আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাংচুর ও লুটপাট করেছে।

হামলা ভাংচুরের কথা অস্বীকার করে বিজয়ী চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম হাওলাদার বলেন, মোল্লাবাড়ির মোড়ে আমার সমর্থকদের কুপিয়ে ও পিটিয়ে ১০ জনকে মারাত্মক আহত করেছে। হিন্দুপাড়া এলাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলতে দিচ্ছে না হারুন হাওলাদারের লোকজন।

পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন বলেন, উত্তেজিত দুই গ্রুপকে মুখোমুখি হতে দেইনি। তবে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটতে পারে। এখনো কেউ মামলা করতে আসেনি।

আরও খবর: রাজনীতি