জাতীয়

কাঠগড়ায় ছাত্র রাজনীতি

  প্রতিনিধি ১ এপ্রিল ২০২৪ , ১১:২৫:৪২ প্রিন্ট সংস্করণ

নীলাকাশ টুডে

 

বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সব আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্ররাজনীতি এখন কাঠগড়ায়। সংগঠনগুলোর একশ্রেণির নেতাকর্মীর অনৈতিক ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সাধারণ শিক্ষার্থীদের ছাত্ররাজনীতিবিমুখ করছে। আদর্শিক ভিত নড়বড়ে থাকায় নতুন কর্মী তৈরি করতে পারছে না বেশির ভাগ সংগঠন। এ অবস্থায় অন্তত এক ডজন ছাত্র সংগঠন বর্তমানে ব্যানারসর্বস্ব হয়ে পড়েছে। ছাত্রবান্ধব কর্মসূচি তো নয়ই, তারা নিয়মিত নিজেদের সাংগঠনিক সভাও করতে পারছে না। বিপরীতদিকে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসগুলোয় একক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। এ পরিস্থিতিতে প্রতিযোগিতামূলক ও সুস্থ ধারায় না থাকায় বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি উঠছে। ছাত্র সংগঠনগুলো এ দাবির বিরুদ্ধে কড়া প্রতিবাদ জানালেও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সেভাবে পাশে পাচ্ছে না। এ অবস্থায় শিক্ষাঙ্গনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে পথ হারানো ছাত্ররাজনীতির আমূল পরিবর্তন এবং নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশিষ্টজনরা।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) সাধারণ শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের মুখে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের আলোচনা নতুন করে সামনে এসেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, ২০১৯ সাল থেকে ছাত্ররাজনীতি না থাকায় তাদের ক্যাম্পাস ছিল নিরাপদ। এ সময়ে শিক্ষার্থী নিপীড়নের কথা কেউ চিন্তাও করতে পারেনি। এজন্য তারা এখনো ছাত্ররাজনীতি চান না। অন্যদিকে ছাত্রলীগের দাবি, ছাত্ররাজনীতি বন্ধ থাকার কথা বললেও শিবির ও হিযবুত তাহরীর ভেতরে ভেতরে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তাদের অপতৎপরতা রুখতে স্বাভাবিক ছাত্ররাজনীতি চালুর কোনো বিকল্প নেই। এ অবস্থার মধ্যেই সোমবার উচ্চ আদালত বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন। তবে শিক্ষার্থীরা এখনো ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে অটল। এ অবস্থায় চলমান ধারার ছাত্ররাজনীতি কীভাবে বুয়েটে চলবে, তা নিয়ে সব মহলে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। এর আগে ২০২২ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে ছাত্রলীগ একযোগে ১৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি ঘোষণা করে। তখন ক্যাম্পাসের ভেতরে ছাত্ররাজনীতির বিপক্ষে অবস্থান নেয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। সেই সময়েও ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের আলোচনা ছিল তুঙ্গে।

সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের আলোচনা কেন বারবার সামনে আসছে-এ নিয়ে শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ছাত্র সংগঠনগুলো এখন মূলত মূল দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যস্ত। তাদের ছাত্রবান্ধব কর্মসূচি নেই বললেই চলে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন একক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে। সেখানে আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জড়াচ্ছে তারা। এর পেছনে রয়েছে স্বার্থের দ্বন্দ্ব। টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ও নিয়োগ বাণিজ্য ঘিরে অনেক ছাত্রনেতা বিপুল সম্পদের মালিক হচ্ছেন। এ নিয়েই মূলত ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে, যা শিক্ষার্থীদের মনে চরমভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ কারণেই ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জোরালো হচ্ছে।

আরও খবর: জাতীয়