• সারাদেশ

    গভীর রাতে ককটেল হামলা, ঘটনাস্থলে পড়েছিল আ.লীগ নেতার ফোন

      প্রতিনিধি ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ , ৯:৫৬:৩১ প্রিন্ট সংস্করণ

     

    নীলাকাশ টুডেঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে গভীর রাতে ঠিকাদার ও ব্যবসায়ীর বাড়ির সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়নের চকঘোড়াপাখিয়া গ্রামের মো. আব্দুস সালামের বাড়ির সামনে শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) রাত ১টা ৮ মিনিটের দিকে এই ককটেল বিস্ফোরণ হয়। ঘটনাস্থল থেকে একটি তাজা ককটেল ও পড়ে থাকা এক আওয়ামী নেতার মোবাইল উদ্ধার করেছে পুলিশ।

    প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দিবাগত রাত ১টা ৮ মিনিটের দিকে বাড়ির সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ককটেলের শব্দে ঘুম ভাঙে স্থানীয় বাসিন্দা ও মো. আব্দুস সালামের পরিবারের সদস্যদের। এ সময় তারা ঘটনাস্থলে একটি মটোরালা ব্র্যান্ডের মোবাইল ও তাজা ককটেল দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়।

    ঘটনার খবর পেয়ে শিবগঞ্জ থানা পুলিশের একটি দল উপস্থিত হয়ে মোবাইল ও তাজা ককটেল উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত মোবাইলটি সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওদুদ মহরিলের বলে জানা যায়। এ ঘটনার পর আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা ও মো. আব্দুস সালামের পরিবারের সদস্যরা। তার দুই ছেলে মো. মাহবুব আলম শামীম (৪৫) ও মো. আব্দুল মমিন শাহীন (৩৫) দুজনই পেশায় ঠিকাদার ও ভাটামালিক। তাদের দুই ভাইয়ের তিনটি ইটভাটা রয়েছে।

    মো. আব্দুস সালামের ছেলে মেসার্স মাহমুদুর এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার মো. মাহবুব আলম শামীম বলেন, বাসার সবাই ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ রাত ১টা ৮ মিনিটে বাড়ির সামনে বিকট শব্দ শুনতে পেলে ঘুম ভাঙে। পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাসা বের হয়ে, দেখলাম একটি ককটেল বিস্ফোরণ হয়ে ধোঁয়া বেড়োচ্ছে। এ সময় পাশেই আরেকটি তাজা ককটেল ও একটি মোবাইল দেখতে পাই। পরে স্থানীয় গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে থানায় খবর দিলে তারা এসে এসব উদ্ধার করে।

    ছোট ছেলে মেসার্স মুনিয়াত এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার মো. আব্দুল মমিন শাহীন জানান, রাতেই ককটেল ও মোবাইল উদ্ধার করে থানা পুলিশ নিয়ে যায়। বাসার চারিদিকে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। এসবের ফুটেজেও ককটেল হামলা করে মোটরসাইকেলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা সুস্পষ্ট রয়েছে। পুলিশ বলেছে, থানায় মামলা বা অভিযোগ করলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

     

    ঠিকাদার মো. মাহবুব আলম শামীমের স্ত্রী সুলেখা খাতুন বলেন, ঘটনার পর থেকেই আমরা আতঙ্কে রয়েছি। বাসায় পুরুষ মানুষ থাকে না। ছেলেমেয়ে নিয়ে আমরা ঘটনার পর ভীত হয়ে দিন পার করছি। আমাদের নিরাপত্তার প্রয়োজন।

    স্থানীয় বাসিন্দা মো. মোক্তারুল ইসলাম জানান, রাতে বিকট শব্দ পেয়ে আশেপাশের মানুষজন ছুটে আসি। এসে দেখি, অনেক লোকজন হাজির হয়েছে। সবার সামনে পুলিশ একটি তাজা ককটেল ও পড়ে থাকা মোবাইল উদ্ধার করেছে। সকালেও বিস্ফোরণ হওয়া ককটেলের খোসা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

    নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ সাদিকুল ইসলাম বলেন, আমার বাড়ির পাশেই ঘটনা। আমিও ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলাম। আশেপাশের লোকজনের কথা শুনে এগিয়ে আসলে ককটেল পড়ে থাকতে দেখলে আমিই পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে এসব আলামত নিয়ে যায়।

    মহারাজপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওদুদ মহরিলের মুঠোফোনে কল দিলে তা রিসিভ করেন শিবগঞ্জ থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) হরেন্দ্র নাথ দেবদাস। ফোন রিসিভ করে তিনি বলেন, ফোনটি জব্দ করা হয়েছে। এখন থানায় রয়েছে। ওদুদ মহরিলের আরেকটি ফোন নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

    শিবগঞ্জ থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জোবায়ের আহমেদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। ঘটনাস্থল থেকে একটি মোবাইল ও তাজা ককটেল উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় যে ব্যক্তির বাড়ির সামনে ককটেল হামলা হয়েছে, তারা মামলা দায়ের করলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

    আরও খবর

    Sponsered content