খেলা

সেই সাফ জয়ের পর নামছে সাবিনারা

  ক্রীড়া প্রতিবেদক ১৩ জুলাই ২০২৩ , ৮:৩৯:২৪ প্রিন্ট সংস্করণ

 

কাঠমান্ডু থেকে সোনালি রঙের ট্রফি নিয়ে দেশে ফিরতেই সাবিনা খাতুনদের নিয়ে সে কী উন্মাদনা। লোকেলোকারণ্য এয়ারপোর্ট থেকে ছাদখোলা বাসে করে ঢাকা শহর প্রদক্ষিণ। গত বছরের সেপ্টেম্বরে নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে হিমালয় জয় করে ফেরা কৃষ্ণা রানী-সানজিদা আক্তারদের সময়টা ছিল স্বপ্নের মতো। কিন্তু এরপর ম্যাচ খেলার জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হলো ১০ মাস।

একের পর এক সফর বাতিলের পর আজ একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ হচ্ছে সাবিনাদের। যাদের হারিয়ে সাফের সেরা হয়েছে মেয়েরা, সেই নেপালের সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে আবার আন্তর্জাতিক আঙিনায় তারা। কমলাপুর স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় প্রথম প্রীতি ম্যাচে হিমালয়কন্যাদের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

স্বপ্ন আর বাস্তবতার মধ্যে কতটা ফারাক, তা মাঝের সময়গুলোতে বুঝতে পেরে ফুটবলই ছেড়ে দিয়েছেন সাফ জয়ের অন্যতম কারিগর সিরাত জাহান স্বপ্না-আঁখি খাতুন। কোচের চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন দেশের নারী ফুটবলের রূপকার গোলাম রব্বানী ছোটন।

এত সব অস্বস্তির মধ্যে ছিল আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে না পারার কষ্ট। নারী সাফে চ্যাম্পিয়ন হয়েও শুধু অনুশীলনে সময় পার করা দলটির ফুটবলাররা মানসিকভাবেও ধাক্কা খান। তাদের কক্ষপথে ফেরানোর জন্য ফুটবল ফেডারেশন যখন কাউকে পাচ্ছিল না, তখন পাশে এসে দাঁড়ায় নেপাল। এই প্রথম ছোটনবিহীন কোনো ম্যাচ খেলতে নামছেন মেয়েরা। বলা যায়, নতুন যুগের সূচনা। প্রথমবারের মতো প্রধান কোচের ভূমিকায় থাকা মাহবুবুর রহমান লিটুর জন্য ডাগ আউটে দাঁড়ানোটা বড় চ্যালেঞ্জ।

দু’দলের ৯ দেখায় বাংলাদেশের এক জয়ের বিপরীতে নেপালের মেয়েরা জিতেছে ছয়টিতে। বাকি দুটি হয়েছে অমীমাংসিত। নেপাল ম্যাচটি বাংলাদেশের কাছে সর্বশেষ। অথচ গত সাফের পর হিমালয়ের দেশটি চারটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে। ভালো প্রস্তুতির সঙ্গে নেপালের মেয়েরা এখন ক্ষুধার্ত।

তাদের শক্তি আরও বেড়েছে দলের তারকা সাবিত্রা ভান্ডারি থাকায়। গত সাফের দলটি নিয়েই বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলতে এসেছে তারা। হোম গ্রাউন্ডে ম্যাচ হলেও মাহবুবুর রহমান লিটুর দল যেন ভাঙা হাট। গত সাফে খেলা সিরাত জাহান স্বপ্না, আঁখি খাতুন, আনুচিং মোগিনি ও সাজেদা খাতুন অবসর নিয়েছেন। জ্বরের কারণে নেই শামসুন্নাহার জুনিয়র। অভিজ্ঞ কৃষ্ণাকে নিয়েও আছে শঙ্কা।

তারকারা না থাকাই আফিদা, সুমাইয়া, শাহেদা, আকলিমা, সুরমা এবং স্বর্ণার মতো নতুনদের নিয়ে জয়ের ছক কষছেন বাংলাদেশের কোচ। ছোটনের ছকেই দলকে খেলাবেন বলে বুধবার ম্যাচ-পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে জানান লিটু, ‘অনেক দিন ধরে ম্যাচ খেলতে পারছিলাম না আমরা। ম্যাচ খেলার জন্য মেয়েদের মতো আমিও ক্ষুধার্ত ছিলাম। আপনারা জানেন, সাফে আমাদের একটা পরিপূর্ণ টিম ছিল। এবার অনেকেই হয়তো নেই। তার পরও আমি বলব, দেশের মাটিতে খেলা বলে মেয়েরা সর্বোচ্চটা দেওয়ার জন্য চেষ্টা করবে।’

ফুটবলে দিন বদলের গল্পটা যাদের মাধ্যমে লেখা হয়েছে, সেই মেয়েদের জন্য গত ১০টি মাস ছিল কঠিন। ম্যাচ খেলতে না পারায় নিজেদের অবস্থান কোথায় আছে, তা এখন অজানা সাবিনার কাছে, ‘এটা সত্যি ট্রেনিংয়ে থাকা আর ম্যাচ খেলার মধ্যে বিস্তর তফাত। তাই ট্রেনিং করছেন, নিজেকে বুঝতে পারবেন যখন আপনি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলবেন। যেহেতু নেপাল আমাদের কাছে সাফে হেরেছে, সেহেতু তাদের বড় টার্গেট হচ্ছে আমাদের এখানে হারানো। তাই ওদের জন্য চ্যালেঞ্জ অনেক বেশি, আমাদের কাছেও তাই।’

আরও খবর: খেলা