জাতীয়

যে কারনে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বিহীন ভোট চায় আ”লীগ

  প্রতিনিধি ১১ মার্চ ২০২৪ , ২:২৪:২২ প্রিন্ট সংস্করণ

নীলাকাশ টুডে 

 

ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো, নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হিসেবে উপহার দেওয়ার ভাবনা থেকে ৯ বছর পর দলীয় প্রতীক ছাড়াই স্থানীয় সরকারের নির্বাচন করার ঘোষণা দেয় ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার দলীয় প্রতীকবিহীন ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনের ফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ভোটের হার বাড়লেও কোথাও তা ততটা উৎসবমুখর হিসেবে দেখা যায়নি। ভোটের মাঠে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় বিজয়ী প্রার্থীরাও ছিলেন নির্ভার। সব মিলিয়ে নির্বাচনী উৎসবে ভোটারদের আগ্রহেও ভাটা লক্ষ্য করা গেছে।

আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীকবিহীন নির্বাচনী কৌশলে ভোটার উৎপস্থিতি বাড়লেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে। বিশ্লেষকদের মতে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপিসহ তাদের মিত্ররা বর্তমান সরকারের অধীনে সব ধরনের নির্বাচন বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে তাদের সমর্থক ভোটাররা ছিলেন ভোটবিমুখ। যে কারণে ভোট খুব একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়নি। ভোটের ফলে দেখা গেছে, প্রভাবশালী প্রার্থীদের ধারেকাছেও নেই অন্যান্য প্রার্থী।

দলীয় প্রতীকবিহীন স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সিদ্ধান্তকে ‘ভালো’ আখ্যায়িত করে জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদ (জানিপপ) চেয়ারম্যান অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, দুটি সিটি করপোরেশন ও অন্যান্য জায়গায় দলীয় প্রতীকবিহীন যে ভোট হলো, সেটি অনেক ভালো হয়েছে। আগামীতেও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাচন দলীয় প্রতীকবিহীন হওয়া উচিত। এটা যৌক্তিক সিদ্ধান্ত। এতে গণতান্ত্রিক চর্চাটা দেখা যায়। তবে এটা ছিল পাইলটিং একটা সিদ্ধান্ত। এ সিদ্ধান্ত যুক্তিযুক্ত করতে বিএনপিরও নির্বাচনে থাকা দরকার। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার দায়িত্বও শাসক দলকে নিতে হচ্ছে, এটাই দুঃখজনক।

যেহেতু অধিকাংশ জায়গায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বী ওই একই দলের নেতা, সেহেতু জয়-পরাজয় নিয়ে খুব একটা আগ্রহ নেই সাধারণ ভোটারদের মনে। এ জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা কম হয়েছে বলে মনে করেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা।

সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার এ বিষয়ে বলেন, দলীয় প্রতীক বিহীন যে ভোট হলো সেখানে ভোটের হার যা দেখানো হয়েছে, তা সত্যি ধরলেও ভোটার উপস্থিতি অত্যন্ত স্বল্প। এটার মূল কারণ ভোটের প্রতি মানুষের আস্থাহীনতা। মানুষের ধারণা, ভোট দিলেও যে জিতবে, না দিলেও সে-ই জিতবে। তাই কষ্ট করে কেউ ভোট দিতে যায় না। আবার অনেকে আগ্রহ থাকলেও ভয়ে ভোট দিতে যান না। মূলত ভোট নিয়ে মানুষের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ ও আস্থাহীনতা রয়েছে। সেটারই প্রতিফলন স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও ঘটেছে। তিনি আরও বলেন, দলীয় প্রতীক না থাকলেও প্রার্থী যে দলের, এটা সাধারণ ভোটাররাও জানেন। তাই যখন কোনো প্রভাবশালী প্রার্থী কোথাও থাকেন, সেখানে অন্য প্রার্থীরা দাঁড়ানোর সাহস পান না। যেটা কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে ঘটেছে।

 

আরও খবর

Sponsered content