অর্থনীতি

যে কারনে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিচ্ছেন আমানতকারীরা

  প্রতিনিধি ২১ এপ্রিল ২০২৪ , ৬:৪১:১৭ প্রিন্ট সংস্করণ

নীলাকাশ টুডে

 

দুর্বলের সঙ্গে সবল এবং বেসরকারির সঙ্গে সরকারি ব্যাংক একীভ‚তকরণ প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে পুরো ব্যাংক খাতে একধরনের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

বিশেষ করে ব্যাংকে টাকা রাখা-না-রাখা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্ধে ভুগছেন বেশির ভাগ আমানতকারী। এজন্য ভয়ে কেউ কেউ ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিচ্ছেন।

এ তালিকায় কিছু প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীও রয়েছে। শরিয়াহভিত্তিক একটি বেসরকারি ব্যাংকে কয়েকদিনে আমানত ফেরতের ১২টি আবেদন জমা পড়েছে। প্রতিটিই বড় অঙ্কের এফডিআর। ইতোমধ্যে বেসিক ব্যাংক ২ হাজার কোটি টাকার বেশি আমানত হারিয়েছে।

বিডিবিএল থেকে প্রায় ১০০ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে। একীভূতের তালিকায় থাকা অন্যান্য ব্যাংকের পরিস্থিতিও প্রায় একই। তারা আমানত হারানোর আশঙ্কায়।

জানতে চাইলে বেসিক ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবু মো. মোফাজ্জাল যুগান্তরকে বলেন, ‘২০১৫ সাল থেকে সোনালী, জনতার মতো বেসিকও রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক। এ কারণে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা বেসিক ব্যাংকে টাকা জমা রেখেছে। বেসরকারি ব্যাংকের সঙ্গে একীভ‚ত হওয়ার খবরে তারা টাকা তুলে নিতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে ২ হাজার কোটি টাকার বেশি আমানত তুলে নিয়ে গেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। কারণ তাদের ধারণা, বেসিক ব্যাংক বেসরকারি হয়ে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, এ কারণে সরকারি কোনো ব্যাংকের সঙ্গে একীভ‚ত করার জন্য সরকারের কাছে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পরিচালনা পর্ষদ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ন্যাশনাল ব্যাংকের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, আমানত ধরে রাখা এখন কঠিন হচ্ছে। মাত্র কিছু দিন আগে পুরোনো পর্ষদ ভেঙে নতুন পর্ষদ গঠন করা হয়। নতুন পর্ষদকে অন্তত ছয় মাস থেকে এক বছর সময় দেওয়া উচিত। এখনই একীভূত করার সিদ্ধান্ত ব্যাংকটির জন্য ভালো হবে না। একই কথা বলছে ইউসিবিও।

ব্যাংকটির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, অন্যান্য ব্যাংকের মতো ইউসিবিতেও আতঙ্ক বিরাজ করছে। কারণ, টাকা ফেরত চাইছেন আমানতকারীরা।

এদিকে বেসিক ব্যাংক বেসরকারি খাতের দ্য সিটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে চায় না। তারা কোনো সরকারি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে চায়। এ কথা জানিয়ে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়েছে।

এর আগে ৯ এপ্রিল অর্থমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়ে ব্যাংকটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও বলেছিলেন, তারা বেসরকারি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে চান না। বেসিক ব্যাংক শতভাগ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক।

 

বেসরকারি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্তে আতঙ্কগ্রস্ত হচ্ছেন বেসিক ব্যাংকের আমানতকারীরা। তাদের কেউ কেউ বেসিক ব্যাংক থেকে আমানত তুলে নিতে শুরু করেছেন। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোই আমানত বেশি সরিয়ে নিচ্ছে।

আরও খবর: অর্থনীতি