সম্পাদকীয়

ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় চাঁদাবাজি

  প্রতিনিধি ২ জানুয়ারি ২০২৩ , ৮:২৭:৩৭ প্রিন্ট সংস্করণ

 

সম্পাদকীয় কলামঃ রাজধানীর ডেমরায় চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের বেপরোয়া হয়ে ওঠার সংবাদ কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়। জানা গেছে, প্রশাসনের উদাসীনতায় সড়কের দুপাশ দখল করে অবৈধ দোকানপাট ও অটোরিকশা স্ট্যান্ড স্থাপন করে সেখান থেকে চাঁদা আদায় তো চলছেই; উপরন্তু শুভেচ্ছা বিনিময়ের নামে এলাকার বিভিন্ন শিল্পকারখানা থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে-আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ ছাড়াও স্থানীয় সংসদ-সদস্যের ক্যাডার বাহিনী চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছে। এছাড়া পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজদের মদদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, যা মোটেই কাম্য নয়।

দুঃখজনক হলো, অবৈধ চাঁদাবাজির সঙ্গে কেবল বিশেষ কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠী জড়িত নয়; অথবা বিষয়টি কোনো একটি জেলা বা অঞ্চলের মধ্যেও সীমাবদ্ধ নয়। বস্তুত অবৈধ চাঁদাবাজির শেকড় দেশজুড়ে বিস্তৃত। রাজধানীর ডেমরায় চাঁদাবাজির কারণে রাস্তায় চলাচলকারীরা প্রতিদিন চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রেও সৃষ্টি হচ্ছে নানারকম প্রতিবন্ধকতা। চাঁদাবাজির কারণে পণ্যমূল্য বৃদ্ধির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। বিভিন্ন বাস কোম্পানি, ব্যক্তি, সংগঠন ও সমিতির নামে টার্মিনাল ও গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি স্টপেজ থেকে প্রতিদিন মোটা অঙ্কের টাকা উঠানো হচ্ছে। জানা গেছে, রাজধানীতে চলাচলকারী গণপরিবহণগুলোর মধ্যে কেবল বাস থেকেই প্রতিদিন অন্তত ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। রাজধানীর বাইরে প্রতিটি বিভাগেও ব্যাপক চাঁদাবাজির সংবাদ সর্বজনবিদিত। বস্তুত বর্তমানে রাজধানীসহ সারা দেশের জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে চাঁদাবাজি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, যা রোধ করা জরুরি।

অপ্রিয় হলেও সত্য, দেশে চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও টেন্ডারবাজির জন্য দায়ী মূলত রাজনীতির বর্তমান ধারা। লেজুড়বৃত্তির রাজনীতির কারণে কোনো দল ক্ষমতাসীন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের সমর্থিত বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের দৌরাত্ম্য মারাত্মকভাবে বেড়ে যায়। বলা বাহুল্য, এ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা হয় অস্ত্র ও পেশিশক্তি দ্বারা। চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হলে শাসনব্যবস্থা ও আইনের প্রতি দেশের মানুষের আস্থা নষ্ট হয়ে যেতে পারে, যা অনভিপ্রেত। রাজধানীর ডেমরাসহ সারা দেশ থেকে চাঁদাবাজি নির্মূলে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নেবে, এটাই প্রত্যাশা।

আরও খবর

Sponsered content