শ্যামনগরে হাসপাতালে ছটপট করছে মেয়ে, খোঁজ নিচ্ছে না অফিসার জামাই!


MD Nuruzzaman প্রকাশের সময় : মে ৩, ২০২৩, ৩:৩৭ পূর্বাহ্ন /
শ্যামনগরে হাসপাতালে ছটপট করছে মেয়ে, খোঁজ নিচ্ছে না অফিসার জামাই!

মোঃ নুরুজ্জামান, সম্পাদক, নীলাকাশ টুডে 

সাতক্ষীরার উপকূলীয় একটি উপজেলায় হাসপাতালের ফ্লোরে পেটে ব্যথায় ছটপট করছেন এক সুন্দরী মহিলা। মধ্যবিত্ত পরিবার হলেও একটি মাত্র সন্তানের সুখের আসায় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একজন ছেলের সাথে বিয়ে দেন মেয়ের মা ও বাবা৷ বড় আশা করে মেয়ের পরিবার, জামাইকে বিয়ের সময় মাত্র ১৫ লক্ষ টাকার জিনিসপত্র দেন। তিন বছর ভালো থাকার পরে পারিবারিক অশান্তি সৃষ্টি হয়। সেই চিন্তায় শারীরিক ভাবে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন সেই মেয়ে। মেয়ের পরিবারের বাড়িতে এনে চিকিৎসা করছেন মা ও বাবা।

আমাদের শ্যামনগর উপজেলার একটি হাসপাতালের নিয়ে আসেন। সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তার মা বাবা। এই ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর হাসপাতাল চত্বরে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। হাসপাতালের ডাক্তার প্রাথমিক চিকিৎসার সর্বোচ্চ ডোজ দিলেও প্রচন্ড পেটে ব্যথা হতে থাকে। রোগীর শারীরিক সুস্থতার পরিবর্তন না হওয়ায় তারা উচ্চ চিকিৎসার জন্য জেলায় নিয়ে যান। আমিও উপস্থিত ছিলাম। মেয়েটি তার মাকে বলছে মা আমি আর বাঁচাবো না, আমাকে মেরে ফেলো। আমি আর সহ্য করতে পারছি না। মেয়েটির আর্তনাদে হাসপাতালের পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। বার বার এই শব্দ ব্যবহার করে যাচ্ছেন। স্যালাইনের উপরে চলছে তার জীবন। নতুন একটি ভাইরাসজনিত রোগ হয়ে প্রচন্ড ব্যথা অনুভবের কারণে মাঝে মধ্যে চিৎকার দিচ্ছেন। হাসপাতালের পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে।

এই মেয়ের ছটপটের দৃশ্য যে কেউ দেখলে চোখের পানি ধরে রাখতে পারবেন না।

আজ তার হয়েছে কাল আমার পরিবারেও হতে পারে এজন্য আমার মনে হয়েছে আল্লাহর কঠিন পরীক্ষা দেখলাম। আল্লাহ প্রত্যেককে সুস্থ করে দিক এবং সেই সাথে সবাইকে সহি বুঝ দান করুক। এত কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও তার অফিসার স্বামী তাকে একনজর দেখতেও আসলো না। বলা হচ্ছে অফিসার স্বামীর বক্তব্য অনুযায়ী এই মেয়ে মরে গেলে তার নাকি ভালো হয়। কতটা নিষ্ঠুর নির্মম মানুষ সমাজে রয়েছে ভাবলেই কষ্ট লাগে।

 

যাইহোক আমার একটা প্রশ্ন মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে, সেটা হচ্ছে, ধর্নাঢ্য বা উচ্চ পর্যায়ের শিক্ষিত অথবা উচ্চ পর্যায়ের চাকরিজীবি ছেলের সাথে মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার আগে তার মন-মানসিকতা কেমন, ছেলের চরিত্র এবং তার পরিবারের বিষয় খোঁজখবর নিতে হবে। কথিত আছে সুন্দরী মেয়েদের পরিবারের লোভ প্রচুর। প্রত্যেকের সন্তান নিজেদের কাছে অনেক দামি, তার মানে এই নয় লোভে পড়ে কোটিপতি উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত লোভী লোকদেরকে সাথে মেয়ে বিয়ে দিয়ে সুখে থাকবেন। ছেলে যদি ভাল হয় গরিব ছেলে হলেও দোষের নয়।

সুখ কখনো টাকা দিয়ে কেনা সম্ভব নয়, মানুষের মনেই প্রকৃত সুখ থাকে। মানুষের সুস্থ থাকার প্রধান শর্ত হচ্ছে সুখে থাকা দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকা। মানুষের টাকার প্রয়োজন রয়েছে তার মানে এই নয়, টাকা থাকলেই আপনি সুখী থাকবেন। আমার মনের কষ্টে লেখাটি লিখলাম। মেয়ে এবং মেয়ের পরিবারের আত্মসম্মান রক্ষার্থে তাদের পরিচয় গোপন রাখা হলো।