রাজনীতি

হঠাৎ উত্তপ্ত রাজনীতির মাঠ

  প্রতিনিধি ১ অক্টোবর ২০২২ , ২:২২:০৬ প্রিন্ট সংস্করণ

 

নীলাকাশ টুডেঃ হঠাৎ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক পরিস্থিতি। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মাঝেমধ্যেই ঘটছে সহিংসতা। এসব ঘটনায় বলি মানুষের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়েও জমে ওঠে নোংরা খেলা। এ ছাড়া সহিংসতা দমনে অংশ নেওয়া পুলিশের গুলিতে নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও ভোলায় রাজনৈতিক দলের কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় উঠেছে নানা প্রশ্ন।

তবে সরকারের শীর্ষস্থানীয়রা প্রতিবারই বলছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় সব কিছুই করা হবে। অন্যদিকে, গত নয় মাসে বিভিন্ন পর্যায়ের স্থানীয় নির্বাচনসহ রাজনৈতিক সংঘাত ও সহিংসতার ৩৮৭ ঘটনায় ৫৮ জন নিহত এবং ৫ হাজার ৪০০ জন আহত হয়েছেন বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চলমান পরিস্থিতি অনেক নেতিবাচক ইঙ্গিত দিচ্ছে। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে নানা ক্ষেত্রে দুর্বৃত্তায়ন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা।

চাহিদা বাড়বে পেশাদার অপরাধীদের। রাজনীতির অঙ্গনে সুস্থ পরিবেশ আনা সম্ভব না হলে এবার অপশক্তি মাথা চড়া দিয়ে ওঠার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তাঁরা। নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মাদ আলী শিকদার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রাজনীতি যখন মানুষের কাছে ব্যবসা হয়ে যায় তখন তো এসব সহিংসতা ঘটবেই। অর্থ, শক্তি ও দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ করা না হলে সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশ কখনো প্রত্যাশা করা যায় না।
যদিও আমরা হামেশাই এসব ভুলে যাই। বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখি। ’ তিনি আরও বলেন, ‘সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থেই দেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এসব বিষয়ে আলোচনা দরকার। জনগণের কল্যাণই যদি মূল উদ্দেশ্য হয় তাহলে এর কোনো বিকল্প নেই। ’ গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ নূর খান স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদনে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে।
আসকের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩১ জুলাই ভোলায় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে আনার দাবিতে বিএনপির কর্মসূচি কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটে। পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন স্বেচ্ছাসেবক দলের একজন স্থানীয় নেতা, পরে আহতাবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ভোলা জেলা ছাত্রদল সভাপতিরও মৃত্যু হয়। ১ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ এবং ২২ সেপ্টেম্বর মুন্সীগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হন আরও দুই যুবদল কর্মী। এর আগে জুনে গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি সীতাকুন্ড বিস্ফোরণে আহতদের দেখতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে তাঁদের ওপর হামলা চালায় ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ। এতে জোনায়েদ সাকিসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক জিয়া রহমান বলেন, ‘আমাদের দেশে রাজনৈতিক পরিবেশ উন্নত হয়নি। নির্বাচন এলেই সহিংসতা বেড়ে যায়। নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি আন্দোলনে নামছে। আর আন্দোলন কেন্দ্র করে সহিংসতার সৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণেই সহিংসতা ঘটে। ’

সমঝোতা ও সংলাপ ছাড়া পথ নেই উল্লেখ করে অধ্যাপক জিয়া বলেন, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা নিয়ে প্রধান দুটি দলের মধ্যে বড় ধরনের দূরত্ব কাজ করে। তবে এটা ঠিক, তাদের মধ্যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি চর্চার বোধোদয় না হলে আবারও অপশক্তি মাথা চড়া দিয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।

আরও খবর: রাজনীতি