সারাদেশ

হিরো আলমের এত ভোট পাওয়া নিয়ে যা বলছেন আ.লীগ-বিএনপির নেতারা

  বগুড়া প্রতিনিধিঃ ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ৫:১৫:১১ প্রিন্ট সংস্করণ

 

বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম একতারা প্রতীকে পেয়েছেন সাড়ে ১৯ হাজার ৫৭১ ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বী ১৪ দলের শরিক প্রার্থী জাসদের (ইনু) এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন (মশাল) ২০ হাজার ৪০৫ ভোট এই আসনে এমপি নির্বাচিত হন। প্রতিদ্বন্দ্বীর থেকে মাত্র ৮৩৪ ভোট কম পাওয়ায় অল্পের জন্য সংসদ সদস্য হতে পারেননি আলোচিত এই ইউটিউবার।

হিরো আলমের নির্বাচন, প্রাপ্ত ভোট ও পরাজয় নিয়ে বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দিনভর চলছে আলোচনা-সমালোচনা। কেউ বলছেন, এই আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থী না থাকায় তরুণ প্রজন্মের অনেকে এই প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন। আবার কেউ কেউ দাবি করছেন, দেশে নির্বাচনি পরিবেশ না থাকায় ক্ষোভ থেকে হিরো আলমের প্রতীক একতারায় এত ভোট পড়েছে। আজ বগুড়া-৪ আসনের কাহালু ও নন্দীগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া যায়।

তারা জানিয়েছেন, মাত্র ৯-১০ মাস পর এ সংসদের মেয়াদ শেষ হবে। এখানে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াত প্রার্থী দেয়নি। আওয়ামী লীগ সমর্থিত ১৪ দলের শরিক জাসদের প্রার্থী ছিলেন জেলা জাসদের সভাপতি মশাল মার্কার এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন। আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশ মশাল মার্কার পক্ষে কাজ করেনি।

তাদের অভিযোগ, গতবার এমপি থাকাকালে তানসেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেননি। বিএনপি-জামায়াত অধ্যুষিত এই আসনে তাদের দলীয় প্রার্থী নেই। হিরো আলম ইউটিউব, ফেসবুকের মানুষ। তাই ফেসবুক ও ইউটিউবসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহারকারী ও তার তরুণ অনুসারীরা তাকে ভোট দিয়েছেন। ফলে হিরো আলম জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যান। অথচ তিনি ২০১৮ সালে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে এই আসনে হিরো আলম পেয়েছিলেন মাত্র।

নন্দীগ্রাম উপজেলার গণমাধ্যমকর্মী নাজমুল হুদা সরকার জানান, নৌকা ও ধানের শীষের প্রার্থী না থাকায় অনেক সচেতন ভোটার কেন্দ্রে যাননি। ফেসবুক ও ইউটিউবার তরুণ প্রজন্ম হিরো আলমকে ভোট দিয়েছেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান জানান, ভোট মানুষের মনের বিষয়। তাই তারা কখন কাকে ও কী কারণে ভোট দেবেন তা বলা কঠিন।

কাহালু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন কবিরাজ দাবি করেন, বিএনপি-জামায়াত চায় এ সংসদ হাস্যকর হোক। তাই তারা ভোট দিতে না গেলেও উঠতি বয়সের ইউটিউবারদের উসকে দিয়েছে। হিরো আলম বেশি ভোট পাওয়ায় আমার মতো অনেকেই আশ্চর্য হয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সাংস্কৃতিক কর্মী বলেন, হিরো আলমকে আমরা কখনও পছন্দ করি না। তিনি যেভাবে রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড করেন তাতে আমরা লজ্জিত। কাহালু জামায়াত অধ্যুষিত এলাকা। ২০১৩ সালে চাঁদে সাঈদীকে দেখার মতো তারা হিরো আলম জিতছে বলে গুজব ছড়ায়। অনেক অবুঝ মানুষ হিরো আলমকে ভোট দিয়েছেন। আর স্যোশাল মিডিয়া ও সাংবাদিকরাও তাকে এগিয়ে দেয়।

বগুড়া-৪ আসন থেকে পদত্যাগকারী এমপি বিএনপি নেতা মোশারফ হোসেন দাবি করেন, মানুষ আওয়ামী লীগ বা ১৪ দলীয় জোটের কাউকে এমপি হিসেবে দেখতে চান না। মানুষ তাদের ওপর ক্ষোভ থেকে ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনকে তামাশায় পরিণত করেছে।

আরও খবর: সারাদেশ