জাতীয়

নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী

  প্রতিনিধি ১০ অক্টোবর ২০২৩ , ১২:৪০:৪৮ প্রিন্ট সংস্করণ

  

আওয়ামী লীগ সরকারে আছে বলেই এ দেশে নির্বাচন নিরপেক্ষ হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা নির্বাচনের কথা বলে আর আমাদের ক্ষমতা থেকে হটানোর কথা বলে, তারা কখনও অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন চায় না। ভোট চুরির মাধ্যমেই তারা ক্ষমতায় এসেছিল।’

মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা রুটে ট্রেন চলাচল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২৯ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল, কেউ ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করেনি। যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। আগামী ৩-৪ বছরের মধ্যে রেল যোগাযোগ আরও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে।

এ সময় কৃষকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আপনাদের আহ্বান করছি, এক ইঞ্চি জমিও যেন খালি না থাকে। আপনারা প্রতিটি জমিতে চাষাবাদ করুন।

তিনি আরও বলেন, ‘সারের দাম আমরা কমিয়েছি। ভর্তুকি দিয়েছি। কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। কারও কোনো সমস্যা হলে আওয়ামী লীগের নেতারা তাদের পাশে দাঁড়ান। এভাবে আমরা মানুষের উন্নয়ন করছি।’

দেশবাসীর উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না, তারা এ দেশের মানুষের উন্নয়নে মনোযোগী ছিল না। একমাত্র আওয়ামী লীগই ক্ষমতায় আসার পর এ দেশের মানুষের উন্নয়ন করেছে। কারও কাছে হাত পেতে নয়, কারও কাছে মাথা নিচু করে নয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে সবাই তার আদর্শে মাথা উঁচু করে বাঁচব সবাই।

এ দেশে কোনো হতদরিদ্র থাকবে না। জাতির পিতা ভূমিহীনদের নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন। শেষ করে যেতে পারেননি। আমরা সেটা নিয়ে কাজ করে চলেছি বলে জানান তিনি।

ইউনূসকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘এক ভদ্রলোক, বিশ্নখ্যাতিও পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সামান্য একটা ব্যাংকের এমডি পদে থাকতে পারবে না বয়সের কারণে- সেটা বলার জন্য পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করেছিলেন। তখন বলেছিলাম- নিজস্ব অর্থায়নেই পদ্মা সেতু গড়ব। জাতির পিতা বলেছিলেন, বাঙালিকে দাবায়ে রাখতে পারবা না। আমরা করে দেখিয়েছি।’

পদ্মা সেতু হয়ে রেল উদ্বোধনের জন্য বেলা ১১টায় তিনি মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী।

ঢাকা-মাওয়া অংশের অগ্রগতি ৮৩ শতাংশ। ভাঙ্গা-যশোর সেকশনের অগ্রগতি ৮৩ শতাংশ। ঢাকা-যশোর সেকশনে নির্মাণকাজের অগ্রগতি ৮৩ শতাংশ। প্রকল্পের সার্বিক ভৌত অগ্রগতি ৮৩ শতাংশ। ২০টি স্টেশনের মধ্যে সমাপ্ত হয়েছে তিনটি। প্রকল্প অনুযায়ী, শত কোচ সংগ্রহের কাজ শেষ হয়েছে।

জানা গেছে, ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা যেতে বাসযাত্রীদের খরচ পড়ে ২৫০ টাকা আর এসিতে ৫০০ টাকার মতো। রেল মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুযায়ী, ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা স্টেশন পর্যন্ত দূরত্ব ৭৭ কিলোমিটার। এ রেলপথের জন্য ভাড়া নির্ধারণে রেলওয়ে একটি প্রস্তাব তৈরি করেছে। এ অনুযায়ী পদ্মা সেতু হয়ে ট্রেনে ভাঙ্গা যেতে যাত্রীদের আন্তঃনগর ট্রেনে (নন-এসি) চেয়ার কোচে ভাড়া গুনতে হতে পারে ৩৫৫ টাকা। এসি চেয়ারে ৬৭৯ টাকা। সব মিলিয়ে বাসের চেয়ে ট্রেনে গুনতে হবে ১০৫-১৭৯ টাকা পর্যন্ত বেশি। ভাড়া প্রস্তাবের ক্ষেত্রে ঢাকা থেকে প্রতিটি গন্তব্যের বাস্তব দূরত্বের সঙ্গে পদ্মা সেতু ও গেন্ডারিয়া-কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত উড়ালপথের জন্য বাড়তি দূরত্ব যোগ করেছে রেলওয়ের কমিটি। রেলওয়ে সূত্র জানায়, পদ্মা সেতুর প্রতি কিলোমিটারকে ২৫ কিলোমিটার দূরত্ব ধরা হয়েছে। একে রেলওয়ে পন্টেজ চার্জের জন্য বাড়তি দূরত্ব বলা হচ্ছে। আর গেন্ডারিয়া থেকে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত উড়ালপথের প্রতি কিলোমিটারকে ধরা হয়েছে ৫ কিলোমিটার। এ জন্যই ঢাকা থেকে ভাঙ্গার প্রকৃত দূরত্ব ৭৭ কিলোমিটার হলেও রেলওয়ে আদায় করতে চায় ৩৫৩ কিলোমিটার দূরত্বের ভাড়া।

পদ্মা সেতু দিয়ে চলবে যে পাঁচ ট্রেন: প্রাথমিকভাবে শুরুতে পদ্মা সেতু দিয়ে পাঁচটি যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই পাঁচটি ট্রেনের মধ্যে খুলনা-ঢাকা রুটের দুটি আন্তঃনগর ট্রেন চিত্রা, ঢাকা-বেনাপোল রুটের বেনাপোল এক্সপ্রেস বর্তমান রুট পরিবর্তন করে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় চলাচল করবে। ঢাকা-কলকাতা রুটের আন্তর্জাতিক ট্রেন মৈত্রী এক্সপ্রেসও রুট পরিবর্তন করে পদ্মা সেতু হয়ে চলাচল করবে। প্রস্তাবনায় আরও বলা হয়, রাজশাহী থেকে গোপালগঞ্জ পর্যন্ত চলাচল করা আন্তঃনগর ট্রেন মধুমতী এক্সপ্রেস ট্রেনটিকেও রাজশাহী থেকে ভাঙ্গা হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এদিকে খুলনা থেকে গোয়ালন্দ রুটে চলাচলকারী মেইল ট্রেন নকশিকাঁথা এক্সপ্রেসকে ভাঙ্গা হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

আরও খবর: জাতীয়