জাতীয়

চেম্বার-অপারেশন বন্ধ হঠকারী সিদ্ধান্ত -বিএমএ

  ঢাকা অফিস ১৮ জুলাই ২০২৩ , ৫:০৯:২৫ প্রিন্ট সংস্করণ

 

 

সেন্ট্রাল হসপিটালে প্রসূতি ও নবজাতক মৃত্যুর ঘটনায় দুই চিকিৎসক গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সোমবার (১৭ জুলাই) ও মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) সারা দেশে প্রাইভেট চেম্বার ও অপারেশন বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি বাংলাদেশ (ওজিএসবি)। দুই চিকিৎসককে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ওজিএসবি ঘোষিত কর্মসূচিতে একাত্মতা জানিয়েছে চিকিৎসকদের অন্য সংগঠনগুলোও।

দুই চিকিৎসকের মুক্তির দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে চিকিৎসকরা আন্দোলন করে আসলেও এবার চেম্বার ও অপারেশন বন্ধ করে ঘোষিত কর্মসূচি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে চিকিৎসকদের নিজ কমিউনিটিতেই।

 

চিকিৎসক গ্রেপ্তার ইস্যুতে অন্য সব আন্দোলনে একাত্মতা পোষণ করলেও রোগীদের জিম্মি করে ওজিএসবি ঘোষিত এ কর্মসূচিতে নিজেদের বিবেকের কাছেই বিব্রতবোধ করছেন অসংখ্য চিকিৎসক। এদিকে, নিজেদের নাম জড়িয়ে এমন কর্মসূচি ঘোষণাকে ‘হঠকারী সিদ্ধান্ত’ বলে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)।

 

এদিকে রোগীদের জিম্মি করে প্রাইভেট চেম্বার ও অপারেশন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। চিকিৎসকরা চেম্বার বন্ধের পক্ষে কথা বললেও অন্য পেশাজীবী ও সাধারণ মানুষ ‘রোগীদের জিম্মি’ ও ‘আন্দোলনে রোগীদের হাতিয়ার’ বানানো হয়েছে উল্লেখ করে বিষয়টি নিন্দনীয় বলে অভিহিত করেছেন।

 

 

 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, চিকিৎসা এমন একটি সেবা, যা আসলে কখনোই বন্ধ হওয়া উচিত নয়। যেকোনো দেশেই, যেকোনো আন্দোলনে চিকিৎসকদের আলাদা করে রাখা হয়। চিকিৎসা বন্ধ করে কোনো কিছু করা এ পেশার নৈতিকতার সঙ্গে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক। এক্ষেত্রে ওজিএসবি চিকিৎসা বন্ধ রেখে যে কর্মসূচিটি দিয়েছে তা কোনো ভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।

ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, চিকিৎসকদেরও যেমন যেকোনো পরিস্থিতিতে সেবা চালিয়ে যাওয়া উচিত, দেশের মানুষকেও চিকিৎসকদের প্রতি একটা পজিটিভ মনোভাব রাখা উচিত। কিন্তু এ জায়গায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।

 

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী বলেন, আমাদের চিকিৎসক সংগঠনগুলো বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের কার্যালয়ে তাদের বিষয়াদি নিয়ে আলাপ-আলোচনা করে। যেকোনো চিকিৎসক এবং যেকোনো সংগঠন আমাদের কার্যালয়ে আসতে পারে। এমনকি তারা আমাদের সভাপতি ও মহাসচিবের সঙ্গেও কথা বলতে পারে। এটাকে বলা হয় শুধু মতবিনিময়।

তিনি বলেন, ওজিএসবির সঙ্গে বিএমএ সভাপতির এমন একটা মতবিনিময় ছিল। কিন্তু বিএমএ ও সভাপতির নাম উল্লেখ করে তারা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, এসব কর্মসূচি বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের নয়।

 

‘বিএমএর কোনো কর্মসূচি নিতে হলে বেশকিছু রুলস ও ক্রাইটেরিয়া আছে। আমরা আমাদের পুরো এক্সিকিউটিভ বডিকে নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করেই কর্মসূচি ঘোষণা করি। আমরা যেহেতু চিকিৎসকদের প্যারেন্ট অর্গানাইজেশন, আমাদের কর্মসূচিগুলো সেভাবেই হয়। হঠকারী কোনো সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন কখনো নেয়নি, ভবিষ্যতেও নেবে না।’

ওজিএসবির এ আন্দোলনকে বিএমএ সমর্থন করে কি না– জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন নেয়নি, নেবে না এবং সমর্থনও করে না। আমরা যদি তাদের কর্মসূচিকে সমর্থন করতাম, তাহলে আমরাই বরং এ সিদ্ধান্ত নিতাম।

 

চেম্বার ও অপারেশন বন্ধে জনগণের ভোগান্তি বাড়বে–  উল্লেখ করে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি ডা. মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, দুদিন প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ রাখার কর্মসূচিটি স্বাচিপের নয়। এটা পুরোপুরি ওজিএসবির কর্মসূচি।

আরও খবর: জাতীয়