জাতীয়

একূল-ওকূল দুকূল গেল যাদের

  প্রতিনিধি ২৭ নভেম্বর ২০২৩ , ২:৪৭:৪১ প্রিন্ট সংস্করণ

নীলাকাশ টুডে

# চেয়ারম্যান পদ ছেড়েছেন ১৯ জন, মনোনয়ন পেলেন ৩ জন

সংসদ সদস্য (এমপি) হওয়ার আশায় উপজেলা ও জেলা পরিষদের পদ ছেড়ে দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন ১৯ জনপ্রতিনিধি। এর মধ্যে ১৭ জন উপজেলা চেয়ারম্যান, ১ জন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ১ জন জেলা পরিষদের সদস্য। তবে এসব জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে মাত্র তিনজন দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। বাকি ১৬ জনের একূল-ওকূল দুকূল গেছে।

গতকাল রবিবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের নাম প্রকাশ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এই তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, অন্তত ১৬ জনপ্রতিনিধি দলীয় মনোনয়ন পাননি। অবশ্য এখনো তাদের সময় ফুরিয়ে যায়নি। দল থেকে বিধিনিষেধ না থাকলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পাবেন তারা।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর। ফলে নির্বাচন কমিশনের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে নতুন করে দু-একজন যুক্ত হতে পারেন। তবে সেই সম্ভাবনা খুবই কম।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত ১৯ জন জনপ্রতিনিধি তাদের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। এদের বেশিরভাগ আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী। যেসব জনপ্রতিনিধির পদত্যাগপত্র মন্ত্রণালয়ে জমা পড়েছে সেগুলো গৃহীত বলে ধরে নেওয়া হয়েছে জানিয়েছেন যুগ্ম সচিব (উপজেলা অধিশাখা) মো. মাসুম পাটওয়ারী। তিনি আমাদের সময়কে বলেন, যাদের পদত্যাগপত্র মন্ত্রণালয়ে এসেছে সেগুলো গৃহীত। যেসব উপজেলা বা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা পদত্যাগ করেছেন তাদের জায়গায় সদস্য-১ যিনি ছিলেন তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সুতরাং যারা পদত্যাগ করেছেন তাদের আর ওই পদে থাকার সুযোগ নেই।

দুকূল হারালেন যারা

কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ, চৌদ্দগ্রামের আব্দুস সোবহান ভূঁইয়া হাসান, টাঙ্গাইলের গোপালপুরের ইউনুছ ইসলাম তালুকদার ঠাণ্ড, নেত্রকোনার দুর্গাপুরের জান্নাতুল ফেরদৌস আরা ঝুমা তালুকদার, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের গাজী মো. মাঈনুদ্দিন, ঢাকার ধামরাইয়ের মোহাদ্দেস হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের সৈয়দ নজরুল ইসলাম, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের জাহিদুল ইসলাম রোমান, চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার এমএ মোতালেব, বাঁশখালীর চৌধুরী মোহাম্মদ গালিব সাদলী। এ ছাড়া সংসদ সদস্য প্রার্থী হতে ইউনিয়ন পরিষদের এক চেয়ারম্যানও পদত্যাগ করেছেন। তিনি হলেন ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার স্বনির্ভর ধামসোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

কপাল খুঁলেছে যেসব চেয়ারম্যানের

চট্টগ্রাম-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন সীতাকুণ্ড উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম আল মামুন, সিরাজগঞ্জ-৪ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন উল্লাপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শফিকুল ইসলাম শফি। এ ছাড়া সুনামগঞ্জ-২ আসনে (দিরাই ও শাল্লা) মনোনয়ন পেয়েছেন শাল্লা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ। তিনি পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের ছোট ভাই। সাতক্ষীরার ৪ আসনের উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম আতাউল হক দোলন

যেকারণে পদত্যাগ করতে হচ্ছে

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী সরকারের লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকলে কেউ এমপি প্রার্থী হওয়ার যোগ্য হবেন না। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জনপ্রতিনিধিদের পদ লাভজনক। এসব পদে থেকে সংসদ নির্বাচন করা যাবে না। এ জন্য পদ ছাড়ছেন চেয়ারম্যানরা। তবে এখনো পর্যন্ত কোনো পৌরসভার মেয়র বা সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরের কোনো পদত্যাগপত্র পাওয়া যায়নি বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান।

উপজেলা চেয়ারম্যান পদ শূন্য হলে কীভাবে পূরণ হবে

চেয়ারম্যান পদ শূন্য হওয়ার পর ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্য থেকে কাউকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার নিয়ম রয়েছে। তবে নির্বাচন করতে বিলম্ব হলে চেয়ারম্যান পদে প্রশাসক নিয়োগের বিধানও রয়েছে। উপজেলা পরিষদ আইন-২০০৮ অনুসারে কোনো চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতি বা পদত্যাগ করলে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন। ৯০ কর্মদিবসের মধ্যে নির্বাচন করে নতুন চেয়ারম্যানের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে। ৯০ কর্মদিবসের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব না হলে সরকার চাইলে ওই উপজেলায় প্রশাসক নিয়োগ করতে পারবে। বর্তমানে ৮টি বিভাগের অন্তর্গত ৬৪টি জেলায় মোট ৪৯৫টি উপজেলা রয়েছে।

আরও খবর: জাতীয়