জাতীয়

আত্মতুষ্টির উপাদান খুঁজছে আ.লীগ-বিএনপি

  নীলাকাশ টুডেঃ ২৮ মে ২০২৩ , ৩:১৬:২৯ প্রিন্ট সংস্করণ

 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতিতে আত্মতুষ্টির উপাদান খুঁজছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি। যদিও অভিজ্ঞ কূটনীতিকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হয়েছে।

নতুন ভিসানীতির আওতায় কেউ নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় বাধা দিলে যুক্তরাষ্ট্র তাকে ভিসা দেবে না। এই নীতি সরকারি ও বিরোধী রাজনৈতিক দল উভয়ের ক্ষেত্রে সমান ভাবে প্রযোজ্য হবে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভিসানীতির প্রয়োগের প্রতি সবার নজর রয়েছে। অপর দিকে পরিস্থিতি অবহিত করতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস জুনে ওয়াশিংটন যাচ্ছেন।

 

বিএনপি আন্দোলনের নামে সহিংসতা করলে তারা ভিসার বিধিনিষেধের আওতায় পড়বে। সরকারের তরফে এটা বারবারই বলা হচ্ছে। আবার বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্র কিছুই বলেনি। এটা নিয়েও সরকারি মহলে স্বস্তি আছে। ফলে সংবিধান মেনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হবে-এমন ধারণা আওয়ামী লীগ নেতাদের। সরকারের স্বস্তির জায়গা এটাই।

বিএনপি নেতারা বলছেন, ২০১৪ সালে একতরফা নির্বাচন এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেওয়ার পরও ভোটে ব্যাপক কারচুপি হয়। ফলে বিএনপি তেমন আসন পায়নি। এক্ষেত্রে, বেসামরিক প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকে সহায়তা করেছে। নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও বিতর্ক চলছে। এমন বাস্তবতায় নির্বাচনের আগেই যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি ঘোষণা করেছে।

বিএনপি মনে করে, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতির ফলে ভোটে রাষ্ট্রযন্ত্রের সহায়তা সরকারি দল আওয়ামী লীগ পাবে না। নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় প্রশাসনের সহায়তা না পেলে বিএনপি ও তার জোটের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিকে থাকা কঠিন হবে। অবাধ নির্বাচনের পথ সুগম হলে তার সুবিধা বিএনপি পাবে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি ব্লিংকেন নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের জনগণকে সহায়তা করতে নতুন এই নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। এদিকে, ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনকে বলেছেন, সোমালিয়া, নাইজেরিয়ার মতো কয়েকটি দেশে যুক্তরাষ্ট্র নতুন ভিসানীতি গ্রহণ করেছে। তবে এ নীতি থেকে এখনো কোনো সুফল মেলেনি।

এই বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি বিএনপির জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হবে। যারা আগুনসন্ত্রাস করে, যারা নির্বাচনে আসবে না বলে বাধার সৃষ্টি করবে তাদের বিরুদ্ধে এই নীতি ব্যবহার হবে। এ নিয়ে আমরা ভীত নই, সন্ত্রস্ত নই, উদ্বিগ্নও নই। কারণ, আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করব। যুক্তরাষ্ট্র তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলেনি। এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। ফলে বিএনপি গ্যাঁড়াকলে পড়ে গেছে। নির্বাচন হবে সংবিধান মোতাবেক।

 

এই বিষয়ে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক উপকমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতিতে বিএনপির আন্দোলনের প্রতিফলন ঘটেছে। সুনির্দিষ্টভাবে শুধু বাংলাদেশকে টার্গেট করে এ ভিসানীতি ঘোষণা করা হয়েছে। এটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। দেশে গণতন্ত্র নেই। মানুষ ভোট দিতে পারে না। শুধু গণতন্ত্রই নয়; মানবাধিকারও নেই। এটারও প্রতিফলন ঘটেছে।

তিনি আরও বলেন, আইন ও বিচার বিভাগ, প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী, রাজনীতিবিদ সবার ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য। তবে এটা তো দিবালোকের মতো পরিষ্কার যে, সরকার সভা-সমাবেশ করতে দেয় না। ভোটের প্রক্রিয়া এখনই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে সরকারই এই বিধিনিষেধের আওতায় পড়বে।

আরও খবর: জাতীয়