সারাদেশ

শ্যামনগরে এমএলএম এমটিএফই’র ফাঁদে ‘নিঃস্ব’ শতশত মানুষ

  শ্যামনগর অফিস ২০ আগস্ট ২০২৩ , ৩:৩৪:৪৬ প্রিন্ট সংস্করণ

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে খুব গোপনে মানুষকে প্রলোভন দেখিয়ে কয়েক কোটি টাকা নিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে দুবাইয়ের অ্যাপ মেটাভার্স ফরেন এক্সচেঞ্জ গ্রুপ (এমটিএফই)। শ্যামনগরে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে এসব টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ভুক্তভোগীর সংখ্যা কয়েক শত এর ওপরে।

এমটিএফই ব্যবসায় প্রতারিত হয়েছেন এমন অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এমটিএফই হচ্ছে অনলাইনে বিনিয়োগের একটি প্ল্যাটফর্ম। একটি চক্র অল্প পুঁজিতে অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে মানুষকে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করে থাকে। লোভনীয় অফারগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, ৬৫ হাজার টাকা বিনিয়োগ করলে প্রতি মাসে ২৪ হাজার টাকা পাওয়া যাবে। তাছাড়া আরও যত মানুষকে রেফারের মাধ্যমে বিনিয়োগ করা হবে এর উপরও মোটা অঙ্কের কমিশন পাওয়া যাবে। গত পরশু দিন বিনিয়োগের লভ্যাংশের টাকা তোলার সময় হয়ে এলে দেখা যায় সফটওয়্যার আপডেট চলছে, এখন সার্ভারে সমস্যা হচ্ছে, ট্রানজেকশন করা যাচ্ছে না ইত্যাদি বিভিন্ন সমস্যা দেখায়। পরে দেখা যায় অটো ট্রেড নামক একটি অপশনের কারণে পুরো ব্যালেন্স শুন্য হয়ে যায়। এমটিএফই’র প্রতারণা নিয়ে অনুসন্ধানে উঠে আসে এসব তথ্য।

অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, এমটিএফইয়ের ওয়েব সাইটে কোনো প্রকার স্যোশাল মিডিয়ার লিংক নেই। নেই এ প্রতিষ্ঠানের মালিক বা কর্মকর্তাদের কোনো নাম ঠিকানা। এরপরও প্রতারক চক্র অত্যান্ত গোপনে মানুষের সাথে প্রতারণা করে এসব অর্থ হাতিয়ে নেয়।

শ্যামনগরে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বলেন, এই অ্যাপের সঙ্গে পরিচিত হই গত কয়েক বছর আগে। প্রথম প্রথম কিছু টাকা লাভ হয়েছিল। তখন আমি ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে আরও লোকজনদের বিনিয়োগ করাই। এবং আমার বিনোয়াগের পরিমাণও বৃদ্ধি করি। একজন টিম লিডার হোয়টসঅ্যাপ গ্রুপে পরামর্শ দেন কিভাবে টাকা বিনিয়োগ ও উত্তোলন করা যায়। গতকাল আমার ব্যালেন্স শূন্য হয়ে যায়। এটি তাদের একটি পরিকল্পিত ফাঁদ ছিল, এখন বুঝতে পেরেছি। আমি যাদের বিনিয়োগ করিয়েছি তাদের ব্যালেন্সও শূন্য দেখাচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরও এক যুবক বলেন, দ্বিগুণ মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে আমাদের এক পরিচিতের মাধ্যমে এমটিএফই বিনিয়োগ করি। এরপর নিয়মিত টাকা উত্তোলন করতাম। আমার দেখাদেখি আরও কয়েকজন বন্ধু ও পরিচিতজন তারাও এমটিএফই বিনিয়োগ করে। আমরা সবাই মিলে বিনিয়োগ করি। কিছু টাকা আমরা পেয়েছি, এতদিন আসল টাকা ব্যালেন্সেই ছিল, গত কয়েক দিন ধরে আমাদের সবার টাকা শূন্য দেখাচ্ছে। আমরা এখন দিশেহারা।

আরও খবর: সারাদেশ