আন্তর্জাতিক

রাতভর সংঘর্ষে ১০০ সেনা নিহত

  প্রতিনিধি ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৩:৩০:৩৭ প্রিন্ট সংস্করণ

 

নীলাকাশ টুডেঃ নতুন করে যুদ্ধে জড়িয়েছে দুই প্রতিবেশী দেশ আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজান। গত সোমবার রাতভর হওয়া এই যুদ্ধে উভয়পক্ষের প্রায় ১০০ সেনা নিহত হয়েছেন। নিহত সেনাদের ৪৯ জন আর্মেনিয়ার এবং ৫০ জন আজারবাইজানের।

এর আগে সংঘর্ষের পর তাৎক্ষণিক ভাবে আর্মেনিয়ার অর্ধশত সেনা নিহত হওয়ার কথা জানা গিয়েছিল। সময় গড়ানোর সাথে সাথে আজারবাইজানের সেনা নিহতের তথ্যও সামনে এসেছে। বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান বলেছেন, সোমবার রাতভর ওই যুদ্ধে তাদের ৪৯ জন সৈন্য নিহত হয়েছে। অন্যদিকে আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওই সংঘর্ষে তাদেরও ৫০ জন সৈন্য নিহত হয়েছে।

প্রতিবেশী এই দেশ দু’টি একে অপরের সঙ্গে দু’টি যুদ্ধ করেছে এবং তিন দশক ধরে নিয়মিত ছোট ছোট সংঘর্ষ চালিয়ে এসেছে। অন্যদিকে মঙ্গলবার রাশিয়া বলেছে, সর্বশেষ সংঘর্ষ বন্ধের জন্য তারা যুদ্ধবিরতির জন্য মধ্যস্থতা করেছে।

আর্মেনিয়া প্রাথমিক ভাবে বলেছিল, যুদ্ধ পুরোপুরি শেষ হওয়ার পরিবর্তে শান্ত অবস্থায় রয়েছে। পরে আজারবাইজান জানায়, তারা প্রতিবেশী দেশটির ‘উস্কানি’র কারণে তার উদ্দেশ্যগুলো সম্পন্ন করেছে।

বিবাদের মূলে রয়েছে নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল, যা মূলত দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক ভাবে আজারবাইজানের অঞ্চল হিসাবে স্বীকৃত। সাবেক সোভিয়েত এ দুই রাষ্ট্র বিতর্কিত নাগোরনো- কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে ২০২০ সালে প্রাণঘাতী এক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল। দুই দেশের সৈন্যদের হামলা -পাল্টা হামলায় সেই যুদ্ধে উভয় পক্ষের সাড়ে ৬ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে।

ওই যুদ্ধের পর আর্মেনিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র রাশিয়া নাগোরনো- কারাবাখে কয়েক হাজার শান্তিরক্ষী মোতায়েন করে। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সেখান থেকে শান্তিরক্ষীদের পরে প্রত্যাহার করে নেয় মস্কো।

আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের মধ্যে বিরোধের কেন্দ্রে বিতর্কিত নাগোরনো -কারাবাখ অঞ্চলটি আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত সীমান্ত অনুযায়ী আজারবাইজানের অংশ, তবে সেখানে থাকে মূলত জাতিগত আর্মেনিয়ানরা।

তবে এই সাংস্কৃতিক বিভেদ কেবল রাজনীতিতে সীমাবদ্ধ নেই, এর পাশাপাশি ধর্মীয় বিভেদও দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি করছে। আর্মেনিয়া মূলত খ্রিস্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ, অন্যদিকে আজারবাইজান মূলত মুসলিম।

 

বিবিসি বলছে, সর্বশেষ লড়াইয়ের জন্য দুই দেশ পরস্পরকে দোষারোপ করছে। আর্মেনিয়া দাবি করছে, সীমান্ত এলাকায় তাদের কয়েকটি শহরে আজারবাইজান গোলা বর্ষণ করেছে এবং তারা এই উস্কানির পাল্টা জবাব দিয়েছে।

অন্যদিকে আজারবাইজান বলেছে, তাদের অবকাঠামো প্রথমে হামলার শিকার হয়। তাদের সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্র বলেন, গত মাস ধরে আর্মেনিয়ার সামরিক বাহিনীর তৎপরতা দেখে বোঝা যাচ্ছিল তারা একটি বড় আকারের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

আরও খবর: আন্তর্জাতিক