রাজনীতি

যে পথে যেতে চাচ্ছে জাতীয় পার্টি

  নীলাকাশ টুডেঃ ৯ জুন ২০২৩ , ৬:৫০:২২ প্রিন্ট সংস্করণ

 

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে চাঙা হয়ে উঠছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। তারা সরকারের ভুলগুলো ধরিয়ে দিয়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে বিরোধী দল হিসেবে সক্রিয় হতে চায়। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে নিজেদের প্রার্থী দেয়ার প্রস্তুতি রয়েছে দলটির।

সূত্র জানায়, সংসদ ভোটের সময় যত এগিয়ে আসছে জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের সরকারের সমালোচনায় তত বেশি মুখর হচ্ছেন। সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার পাশাপাশি চাপ দিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বেশি আসনে ছাড় পাওয়ার পরিকল্পনা করছে জাপা। দেশ ও বিদেশে শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে নিজেদের তুলে ধরার চেষ্টায় রয়েছে দলটি।

জাপা সূত্র জানায়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ চাইলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব’ পালন করতে আগ্রহী জাপা। এছাড়া স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায় যেমন পৌরসভা, সিটি করপোরেশন, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদগুলোতেও দলীয় লোকদের চায় তারা। পাশাপাশি সরকারি যে সব গুরুত্বপূর্ণ পদ আছে সেগুলোর হিসাব-নিকাশেও এগিয়ে থাকতে চায় দলটি। এজন্য প্রয়োজনে আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করবে তারা।

এসব আলোচনা ও হিসাব-নিকাশ চুকিয়ে নেওয়ার আগে আগস্ট মাস পর্যন্ত একা চলবে জাতীয় পার্টি। এরপর দলটি অবস্থা বুঝে সিদ্ধান্ত নেবে মহাজোটে থেকে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করবে নাকি বিএনপির সঙ্গে যাবে? এবার কোনো সমঝোতার জোট নয়, এবার জোট নির্বাচনের। দলটির সংশ্লিষ্টরা জানান, চুক্তি করে আগামী দিনগুলোতে বন্ধুপ্রিতম

রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মাঠে থাকতে চায় জাপার কাদের গ্রুপ। সম্প্রতি এনিয়ে দলের প্রেসিডিয়াম বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এই প্রস্তাবের সঙ্গে একমত হয়েছেন। দলটির নেতাকর্মীদের অভিমত রাজনৈতিক অঙ্গনে যদিও জাপা আনপ্রেডিকটেবল হিসেবে অনেক আগেই পরিচিতি লাভ করেছে। এবারও জাতীয় পার্টি ফের রাজনৈতিক মাঠে আলোচনায় আসতে চায়। ৩২ বছর ক্ষমতার বাইরে থেকে দলটি অনেক খেসারত দিয়েছে। হারিয়েছে দলের অনেক যোগ্য প্রার্থীকে। দলটির এক জরিপে নেতারা দেখতে পেয়েছেন, ১৯৯০ সালে সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সারাদেশে ৭০ থেকে ৭৫টি আসনে জাতীয় পার্টির কোনো প্রার্থী দিতে পারেনি। ওই সব আসনের নতুন প্রজন্ম জাপা সর্ম্পকে কিছুই জানে না বলে অভিমত প্রকাশ করেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্যসহ মাঝারি নেতারা। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, যখনই নির্বাচনের দিন তারিখ ঘনিয়ে আসে, তখনই জাতীয় পার্টির ভেতরে কোন্দল বাড়ে। দল ভাঙনের মুখে পড়ে। এবারও সেদিকে যাচ্ছে। দলটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদের সঙ্গে জিএম কাদেরের কোন্দল বাড়ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

পাশাপাশি রাজনৈতিক অঙ্গনে জাতীয় পার্টির গুরুত্বও বাড়ছে। ক্ষমতাশীল দল আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধী দল বিএনপির কাছে জাতীয় পার্টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য দুটি দলই জাপার সঙ্গে সেতুবন্ধন করতে তৎপর রয়েছে।

এদিকে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জিএম কাদের। বৈঠক শেষে তিনি বলেছেন, আগামী নির্বাচনে জাপা অংশ নেবে। এ ভোটে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেয়ার প্রস্তুতি রয়েছে। মার্কিন ভিসা নীতি নিয়ে জিএম কাদের বলেন, আমেরিকার ভিসা নীতিকে আমরা ইতিবাচক ভাবেই দেখছি।

 

 

আরও খবর: রাজনীতি