সারাদেশ

মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় বাবাকে কুপিয়ে হত্যা

  প্রতিনিধি ৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৭:২৯:১৬ প্রিন্ট সংস্করণ

 

নীলাকাশ টুডেঃ নেত্রকোণার ব্যবসায়ী আবদুল আজিজ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে নিহতের ছেলে ও তার তিন সহযোগী গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১৪। চাঞ্চল্যকর এ হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করে বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে র‌্যাব-১৪ এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাব-১৪ এর কোম্পানি অধিনায়ক মেজর আখের মুহম্মদ জয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বিজয় কর্মকার (১৯), তরিকুল ইসলাম রানা (১৮), মো. আজহার মিয়া (৩৫) ও তরিকুল ইসলাম বিপ্লব (২২)।

র‌্যাব জানায়, গত ১ সেপ্টেম্বর রাতে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সিধলা ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার গোহালাকান্দা ইউনিয়নের মানিকদির গ্রামের আবদুল আজিজ। তাকে কুপিয়ে গুরুতর অবস্থায় ফেলে গেলে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী গত ৩ সেপ্টেম্বর বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে পূর্বধলা থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় মঙ্গলবার রাতে র‌্যাব-১৪ অভিযান চালিয়ে বিজয় কর্মকার, তরিকুল ইসলাম রানা ও আজহার মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। একই রাতে শ্যামগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় নিহতের ছেলে তরিকুল ইসলাম বিপ্লবকেও।

র‌্যাবের কোম্পানি অধিনায়ক মেজর আখের মুহম্মদ জয় বলেন, নিহত আব্দুল আজিজের ছেলে তরিকুল ইসলাম বিপ্লব একজন মাদকাসক্ত এবং মাদক সেবন করে প্রায় সময় বাড়িতে এসে মাতলামি করতেন। মাদক সেবন থেকে ছেলেকে বিরত রাখতে আব্দুল আজিজ ছেলেকে প্রায় সময় শাসন করতে গিয়ে ধমকসহ মারপিট করতেন। এতে বিপ্লব নিজেকে সংশোধন না করে বাবার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার মতো জঘন্য পরিকল্পনা করেন।

এদিকে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জানা গেছে, ঘটনার দুইদিন আগে শ্যামগঞ্জ বাজারে একটি দোকানের পেছনে বসে হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিপ্লব তার বন্ধু বিজয়, রানা, আজাহার, রাসেল ও সাধনদেরকে নগদ ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে ভাড়া করেন এবং হত্যার মিশন সফল করার জন্য বিপ্লব তার সহযোগী বিজয়কে দুটি চাইনিজ কুড়াল কেনার জন্য দেড় হাজার টাকা দেন। গত ১ সেপ্টম্বের রাতে বিপ্লব তার বাবা আজিজকে মোবাইল ফোনে বলেন- ‘বাবা আমাকে পুলিশে ধরেছে, আমাকে ছাড়িয়ে নিয়া যাও।’ আব্দুল আজিজ ছেলের কথা বিশ্বাস করে ঘটনাস্থলে গেলে কিছু বুঝে উঠার আগেই পরিকল্পনা মতো বিপ্লব এবং আজাহার পেছন দিক থেকে আজিজের হাত ধরে এবং রাসেল ও সাধন গামছা দিয়ে গলায় চাপ দিয়ে দুই দিক থেকে টেনে ধরলে বিজয় এবং রানা চাইনিজ কুড়াল দিয়ে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আজিজকে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে ফেলে রেখে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

যাওয়ার সময় পাশে একটি পুকুরে হত্যার কাজে ব্যবহৃত চাইনিজ কুড়াল দুটি তারা ফেলে রেখে যান। পরবর্তীতে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বিপ্লব নিজেই তার বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান র‍্যাব কর্মকর্তা মেজর আখের মুহম্মদ জয়।

আরও খবর: সারাদেশ