প্রতিনিধি ২৮ আগস্ট ২০২২ , ৪:৪০:৪৯ প্রিন্ট সংস্করণ
নীলাকাশ টুডেঃ ‘বাংলাদেশের পরিস্থিতি শ্রীলঙ্কার মতো হবে এবং ক্ষমতার পট পরিবর্তনে প্রধানমন্ত্রী হবেন গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. ইউনূস’। ‘পাওনা লভ্যাংশ পরিশোধ এবং অতিরিক্ত অর্থ দেয়ার প্রলোভন’ এর পাশাপাশি এরকম বার্তা ছড়িয়ে গ্রামীণ টেলিকম এবং টেলিকম ইউনিয়নের কর্মচারীদের সঙ্গে সমঝোতা করার চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।
রোববার (২৮ আগস্ট) গ্রামীণ টেলিকম কর্মচারি ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মাঈনুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে বলে জানিয়েছে ডিবি।
গ্রামীণ টেলিকম এবং টেলিকম ইউনিয়নের কর্মচারীদের সঙ্গে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় মাইনুল ইসলামকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগ গ্রেফতার করে। গত বুধবার (২৪ আগস্ট) কুমিল্লার সদর থানাধীন মগবাড়ি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এই সময় তার কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ এবং ১ কোটি ৭০ লাখ টাকার একটি চেক জব্দ করা হয়।
গ্রেফতার হওয়া তিনজন অর্থ আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছে বলে জানান গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, গ্রামীণ টেলিকম কর্তৃপক্ষ ও গ্রামীণ টেলিকম কর্মচারী ইউনিয়নের কয়েকজন নেতার যোগসাজশে সাধারণ কর্মচারীদের ২৬ কোটি ২২ লাখ টাকা লুটপাট করা হয়েছে। এই ঘটনায় গত ৫ জুলাই গ্রামীণ টেলিকম কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান ও সেক্রেটারি ফিরোজ মাহমুদ হাসানকে গ্রেফতার করা হয়। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
গ্রেফতার মো. মাইনুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে ডিবি প্রধান বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাকেসহ এই প্রতিষ্ঠানের আরও কর্মীদের অর্থের প্রলোভনের পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। আর এর মাধ্যমে ইনডেমনিটি দেওয়ার উদ্দেশ্যে গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সব মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেয়। সেই সঙ্গে কর্মচারী ইউনিয়নের নিয়োজিত আইনজীবীকে অযৌক্তিক ও অতিরঞ্জিত প্রায় ১৬ কোটি টাকা ফি বা পারিতোষিক প্রদান করতেও উৎসাহী করে।
জিজ্ঞাসাবাদে মাইনুল ইসলাম বলেছে, ‘অফিসে ছড়িয়ে দেওয়া হয়, ড. ইউনূস প্রধানমন্ত্রী হলে শ্রমিকদের মামলা কোনও কাজে আসবে না, শ্রমিকরা কোনও ক্ষতিপূরণও পাবেন না। বিপরীতে তাদের চাকরি হারানো, জেল খাটাসহ অন্যান্য নির্যাতনের মুখে পড়তে হবে। মূলত এই ভয়ে এবং কিছুই না পাওয়ার অনিশ্চয়তার বিপরীতে টেলিকম কর্তৃপক্ষের ৪৩৭ কোটি টাকার প্রলোভনে আইনজীবীর পরামর্শে তারা অতি দ্রুত অর্থ তুলে নেয়। আইনজীবী এই সমঝোতা বিষয়টির গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে বলে।