আন্তর্জাতিক

পুতিনের কপাল খুলছে

  প্রতিনিধি ১৫ অক্টোবর ২০২৩ , ৫:০০:৩০ প্রিন্ট সংস্করণ

নীলাকাশ টুডে

দেড় বছরের বেশি সময় ধরে চলা ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ অনেকটাই আড়ালে চলে গেছে গাজায় দখলদার ইসরায়েলির হামলার কারণে। ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের ইসরায়েলে হামলা এবং গাজায় ইসরায়েলের পাল্টা হামলা নিয়ে এখন ব্যস্ত পুরো বিশ্ব। যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে এই লড়াইয়ে ইসরায়েলকে সর্বাত্মক সহযোগিতার ঘোষণা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর নজরও এখন এই সংকটের দিকে। মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতির কারণে পশ্চিমাদের অস্ত্র সরবরাহের একটা বড় অংশ এখন ইউক্রেনের বদলে ইসরায়েলের দিকে ঘুরে যাবে। ইসরায়েলে সংঘাতের কারণে ইউক্রেনের অস্ত্র–অর্থদাতারা কিছুটা বিমুখ হবে। যার করণে সামরিক সহায়তার পরিমাণ কমে যাবে ইউক্রেনে। ধারণা করা হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত দীর্ঘায়িত হলে তাতে একইসঙ্গে দুটি ভিন্ন যুদ্ধে দুই মিত্রকে সহায়তার ক্ষেত্রে আমেরিকার সক্ষমতাও পরীক্ষায় পড়বে।

তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভ্লাদিমির পুতিনের নেতৃত্বাধীন রাশিয়া ইসরায়েলের শত্রু দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। বিশেষত ইরানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রাশিয়া-ইসরায়েল সম্পর্কে অস্বস্তি তৈরি করেছে।

ভ্লাদিমির পুতিনের জন্য এখন সবচেয়ে বড় সহযোগিতা হতে পারে যদি কিয়েভের অস্ত্র সরবরাহে বাধা তৈরি হয়। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন যে সামরিক সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, বাস্তবে সেটার পরিমাণ যেন কমে যায়। মধ্যপ্রাচ্যে যদি ইউক্রেনের মিত্ররা বড় কোনো যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে সেটা ঘটবে। বিষয়টি নিয়ে বশষজ্ঞরা মনে করছেন সময় এখন রাশিয়ার সবচেয়ে বড় মিত্র এবং হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধে পুতিনের কপাল খুলে যাচ্ছে।

এশিয়া টাইমসের এক প্রতিবেদনে ইউনিভার্সিটি অব হালের গোয়েন্দা ও জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ে অধ্যাপক রবার্ট এম ডোভার বলেছেন, ইসরায়েল-হামাস সংঘাতে রাশিয়ার কূটনৈতিক অবস্থান এখনো পরিষ্কার নয়। ঐতিহাসিক ভাবে রাশিয়া ইসরায়েলের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন। সে কারণেই ইউক্রেনে আগ্রাসনের পর ইসরায়েল রাশিয়াকে নরম সুরে সমালোচনা করেছে। মস্কো মধ্যপ্রাচ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী এবং এমনকি যুদ্ধরত দেশগুলোর মধ্যে ইতিবাচক সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে নতুন যে সংঘাত জন্ম হলো, তাতে রাশিয়া নিশ্চিত করেই লাভবান হবে, কিন্তু এতে ক্রীড়নকের ভূমিকায় আসতে পারবে না।

রাশিয়া আরও একটি ক্ষেত্রে লাভবান হবে। কেননা, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আলোচনার একেবারে কেন্দ্র থেকে রাশিয়া গুরুত্ব হারাবে। ইউক্রেনকে দেওয়া সমর্থনের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রে অসন্তোষ বাড়ছে। মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলকে সমর্থন দিতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে। এসব বাস্তবতা ইউক্রেন সংঘাত অবসানে নিষ্পত্তিমূলক ভূমিকা পালন করতে হতে পারে।

২০২৫ সালেও যদি ইউক্রেন সংঘাত চলতে থাকে, তাহলে রাশিয়া নিশ্চিতভাবেই এগিয়ে থাকবে।

আরও খবর: আন্তর্জাতিক