রাজনীতি

জামায়াতের সঙ্গে দূরত্ব কমাতে যে নির্দেশ দিলেন বিএনপি নেতারা

  ঢাকা অফিস ২ আগস্ট ২০২৩ , ৪:৩০:০৩ প্রিন্ট সংস্করণ

সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের একদফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন করছে বিএনপি। তবে দীর্ঘদিনের মিত্র জামায়াতে ইসলামী এই মুহূর্তে তাদের সঙ্গে নেই। মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শুরুর পর থেকে দীর্ঘদিন রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে ছিল জামায়াত। তবে কিছুদিন ধরে আলাদা কর্মসূচির মাধ্যমে নিজেদের শক্তি-সামর্থ্য জানান দিতে শুরু করেছে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন বাতিল হওয়া দলটি। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জামায়াতকে আবারও কাছে টানতে চাইছে বিএনপির হাইকমান্ড। আলাপ-আলোচনা করে পুরোনো মিত্রের সঙ্গে দূরত্ব ঘোচাতে এরই মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের নেতাদের নির্দেশনা দিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, গত ডিসেম্বরে যুগপৎ আন্দোলনের শুরুতে দুটি কর্মসূচিতে বিএনপির সঙ্গে ছিল জামায়াত। এরপর থেকে তারা এককভাবে কর্মসূচি পালন করছে। গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে ১০ দফার ভিত্তিতে সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দেয় বিএনপি। এর আগের দিন গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে জোট বিলুপ্তির ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর থেকে আন্দোলন বা কর্মসূচি নিয়ে জামায়াতের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেনি বিএনপি। বিষয়টিকে ভালোভাবে নেয়নি জামায়াত।

জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘যুগপৎ আন্দোলন শুরুর সময় আমরা আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলাম। কিন্তু আমাদের আমির গ্রেপ্তার হয়ে যাওয়ার পর যুগপৎ আন্দোলন যে প্রক্রিয়ায় চালিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, বিএনপি ঠিক সেভাবে ভূমিকা পালন করেনি। কারণ, যুগপৎ আন্দোলন হবে উভয়ের আলোচনার ভিত্তিতে। যেহেতু বিএনপি যুগপতের প্রধান শরিক, তাদের পক্ষ থেকে সেভাবে যোগাযোগ না রাখায় জামায়াত নিজস্ব স্টাইলে আন্দোলন শুরু করে। এখনো সেটা অব্যাহত আছে। রাজনীতিতে যে যার ধারায় রাজনীতি করবে, এখানে মনোমালিন্যের কোনো বিষয় নেই। আমরা আমাদের রাজনীতি করছি, বিএনপি তাদের রাজনীতি করছে।’

 বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীকে যেভাবে চতুর্দিক থেকে চেপে ধরা হয়েছে, তাতে দলটির যে নতুন প্রজন্ম তারা তাদের নাগরিক অধিকারের দাবিতে তো আন্দোলন করতে পারে। এই নতুন প্রজন্মের কেউ যদি দলবদ্ধভাবে এগিয়ে আসে, বিএনপি তাদের স্বাগতই জানাবে। এখানে দূরত্ব বা মনোমালিন্য কিংবা ভালো-খারাপের তো কোনো ব্যাপার নেই।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর মতো জাতীয় পার্টিও তো একদফার আন্দোলনে নেই। কিন্তু জাতীয় পার্টিও তো বলছে যে, এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। এই দাবিতে কেউ যদি আমাদের সঙ্গে একমত হয়, আমরা তাদের অবশ্যই স্বাগত জানাব। যার যার অবস্থান থেকে সবাই যদি সমস্বরে কথা বলে, সেখানেও একটা ঐক্যতান শুরু হয়। গান এক কণ্ঠে হয়, দ্বিকণ্ঠে হয় আবার সমবেত কণ্ঠেও হয়। সুতরাং তাতে কোনো সমস্যা হয় না।

আরও খবর: রাজনীতি