রাজনীতি

জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ঘরে-বাইরে বিভিন্ন চাপে দুদল

  ঢাকা অফিসঃ ৬ জুন ২০২৩ , ২:৩৯:৫৮ প্রিন্ট সংস্করণ

 

আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ও সরকারবিরোধী আন্দোলন সামনে রেখে ঘরে-বাইরে বহুমুখী চাপে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় করণীয় নিয়ে ব্যস্ত দুদলের নীতিনির্ধারকরা। বিশ্লেষকদের মতে, অন্তত এক ডজন চ্যালেঞ্জের মুখে ক্ষমতাসীনরা। অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে দেখা দিয়েছে বৈদেশিক চাপ। এ ইস্যুতে ইতোমধ্যে প্রভাবশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করেছে নতুন ভিসানীতি। প্রকাশ্যে গুরুত্ব না দিলেও ভেতরে ভেতরে এ নিয়ে দলের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

আওয়ামী লীগের মতো বিএনপির সামনেও রয়েছে নানা চ্যালেঞ্জ। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা। এছাড়া জোটগতভাবে ভোটে অংশ নেওয়া, আসন ভাগাভাগি, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা দলটির সামনে চ্যালেঞ্জ হিসাবে দেখা দেবে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, নির্বাচন সামনে রেখে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে রয়েছে দুস্তর অবস্থানগত পার্থক্য। আওয়ামী লীগ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। নির্বাচনকালীন একটি নতুন সরকার প্রতিষ্ঠায় চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত বিএনপি। রাজপথে দুদলের অবস্থান মুখোমুখি। দুদলেরই সামনে রয়েছে বহুমুখী চ্যালেঞ্জ। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হলে সময় আর বেশি নেই। স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে নির্বাচনি বৈতরণী পাড়ি দেওয়া কতটা সহজ হবে তা ভাবাচ্ছে নেতাদের। এরপর সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে কার হাতে উঠবে রাজদণ্ড-এই মুহূর্তে সেই সুতোর ওপর দিয়ে হাঁটছে দুই দল।

 

 

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ঘরে বাইরে নানা চ্যালেঞ্জে আওয়ামী লীগ। দীর্ঘদিন টানা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা দলটির তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ বিরোধ মেটানো বড় চ্যালেঞ্জ। ইতোমধ্যে নানা কর্মসূচি দিয়ে মাঠে নেমেছে বিএনপি। তাদের আন্দোলন মোকাবিলার পাশাপাশি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চাপ রয়েছে ক্ষমতাসীনদের ওপর। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আমেরিকার নতুন ভিসানীতি। নির্বাচনি বছরে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাও তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ভোটের আগে আসন ভাগাভাগিসহ কয়েকটি ইস্যুতে শরিকদের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখতে হবে দলটিকে। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে যোগ্য প্রার্থী বাছাই, ইশতেহার তৈরি, অপপ্রচারের জবাব ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরাসহ নানা চ্যালেঞ্জ রয়েছে ক্ষমতাসীনদের।

 

এদিকে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বহুমুখী চ্যালেঞ্জে মাঠের বিরোধী দল বিএনপি। দুটি পর্বে এ চ্যালেঞ্জগুলো ভাগ করে তা মোকাবিলায় কাজ করছেন দলটির হাইকমান্ড। প্রথম পর্বে রয়েছে অর্ধডজন বিষয়। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায়। সে লক্ষ্যে চূড়ান্ত আন্দোলনের পরিকল্পনা তৈরি করেছে দলটি। শিগগিরই সরকার পতনের একদফায় রাজপথে নামার প্রস্তুতি চলছে। আন্দোলনের চূড়ান্ড লক্ষ্যে পৌঁছাতে দল ও জোটের ঐক্য ধরে রাখা বিএনপির কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া মামলা-হামলা মোকাবিলা করে সফলভাবে কর্মসূচি বাস্তবায়ন, ‘চেইন অব কমান্ড’ নিশ্চিত করা, সহিংসতা এড়িয়ে আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া, জামায়াতের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত সম্পর্ক কী হবে-সেসব দিকেও বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন হাইকমান্ড।

সরকারবিরোধী আন্দোলনে এবার সফলতার বিকল্প ভাবছে না বিএনপি। দাবি আদায় হলে দ্বিতীয় পর্বে দলটির সামনে আরও কিছু কঠিন বিষয় আসবে। সেগুলোর মধ্যে আছে-যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলো নিয়ে জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ, আসন ভাগাভাগি, যোগ্যদের মনোনয়ন দেওয়া এবং নির্বাচনে জয়ী হলে সবাইকে নিয়ে ঐকমত্যের সরকার গঠন। তবে কোনো কারণে আন্দোলন ব্যর্থ হলে দলটি নতুন করে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়বে। সেক্ষেত্রে নির্বাচন প্রতিহত করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। এরপরও সরকার যেনতেন নির্বাচন করে উতরে গেলে মামলা-হামলায় জর্জরিত বিএনপিকে টিকিয়ে রাখাই হবে তখন তাদের অন্যতম চ্যালেঞ্জ।

 

আরও খবর: রাজনীতি