জাতীয়

এলাকার আতঙ্ক কিশোর গ্যাং প্রধান অনিক!

  প্রতিনিধি ২ অক্টোবর ২০২২ , ৩:৩১:৩৬ প্রিন্ট সংস্করণ

 

নীলাকাশ টুডেঃ পল্লবীর আতঙ্ক কিশোর গ্যাং প্রধান অনিক। মাদক ব্যবসা, হামলা, অস্ত্র নিয়ে মহড়াসহ নানা অপকর্মে জড়িত সে। সম্প্রতি মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় এক স্কুল শিক্ষার্থীসহ তিনজনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে অনিকসহ তার গ্যাংয়ের সদস্যরা। এ ঘটনায় মামলা হলেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, ওই কিশোর গ্যাংয়ের নাম ‘ভইরা দে’। এর প্রধান হাসিবুল হাসান অনিক মিরপুর ১১ নম্বর বাউনিয়া বাঁধের বি ব্লকের ৭ নম্বর লাইনের বাসিন্দা। গত এক মাসে তার বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় ৩টি মামলা ও একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। তার দলে ৩০-৪০ জন সদস্য রয়েছে। তাদের আস্তানা মিরপুর ১১ নম্বরের আদর্শ নগর আড়াই কাঠা ডুইপ প্লট। অনিকের গ্যাংয়ের এক সদস্য বলে, গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে তারা ফেসবুক মেসেঞ্জারে ‘ভইরা দে’ নামের একটি গ্রুপ খোলে।

প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করতে তারা রড, চাকু ইত্যাদি পেটে ঢুকিয়ে দেয়। এ কারণে তাদের গ্যাংয়ের এমন নামকরণ করা হয়। অনিক নিজেই ওই ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপের অ্যাডমিন। গ্যাং সদস্যরা তাদের দৈনন্দিন কর্মপরিকল্পনা ওই গ্রুপে শেয়ার করত। সম্প্রতি কয়েকটি ঘটনায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কিশোর গ্যাংয়ের ওপর নজরদারি বাড়ালে ওই মেসেঞ্জার গ্রুপটি নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে।

স্থানীয়রা জানান, অনিক এবং তার নিকটাত্মীয় ফতেহ, মামুন ও খোকন পল্লবীর শীর্ষ মাদক কারবারি। তাদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। মাদকের টাকায় খুব অল্প বয়সেই অগাধ টাকার মালিক বনে গেছে অনিক।

জানা গেছে, মাদক বিক্রিতে বাধা দেওয়ায় ১১ সেপ্টেম্বর স্কুল শিক্ষার্থী আশিকের ওপর হামলা চালায় অনিক ও তার বাহিনীর সদস্যরা। তারা তাকে কুপিয়ে পেটের নাড়িভুঁড়ি বের করে ফেলে। পরের দিন আশিকের মা নাছিমা আক্তার বাদী হয়ে পল্লবী থানায় একটি মামলা করেন। মামলা করায় আরও খ্যাপে যায় অনিক। ১৬ সেপ্টেম্বর মিরপুর ১১ নাভানার গলিতে আশিকের বাসায় হামলা করে অনিক ও তার বাহিনীর সদস্যরা। হামলার সিসিটিভি ফুটেজ গণমাধ্যমের হাতে এসেছে। এরপর ২৭ সেপ্টেম্বর আশিকের মামা জুয়েলকে কুপিয়ে আহত করে তারা। এর দুদিন পর জুয়েলের বন্ধু পারভেজকেও কোপায় তারা। আশিকসহ আহত তিনজন বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হামলার ঘটনায় জুয়েল ও পারভেজও আলাদাভাবে দুটি মামলা করেছেন। মামলার আসামিরা হলো-হাসিবুল হাসান অনিক, মামুন, খোকন, সাকিব, অপি, শাকিল ও হোসনে আরাসহ অজ্ঞাত পরিচয় ১০-১২ জন।

আশিকের স্বজনরা জানান, অনিকের নেতৃত্বে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা লালমাটিয়া থেকে নাভানার গলিতে প্রতিনিয়ত মহড়া দিচ্ছে। তাদের কোনো স্বজনকে সামনে ফেলেই হামলা করছে তারা।

আশিকের বাবা জীবন বলেন, সন্ত্রাসী অনিকের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা হয়েছে অথচ সে প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ তার কাছে এসে টাকা নিয়ে চলে যায়। তাকে গ্রেফতার করে না।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পল্লবী থানার এসআই খালিদ বলেন, অনিকসহ মামলার অন্য আসামিদের ধরতে কয়েকবার অভিযান চালানো হয়েছে। এজন্য মামলার বাদীরও সহযোগিতা চেয়েছি। টাকা নেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন তিনি।

পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পারভেজ ইসলাম বলেন অনিকের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা হয়েছে। তাকে গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।

আরও খবর: জাতীয়