আন্তর্জাতিক

আসছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার

  নীলাকাশ টুডে ১১ আগস্ট ২০২৩ , ৫:৫৪:২২ প্রিন্ট সংস্করণ

রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে ভেঙে দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানের পার্লামেন্ট। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শে গত বুধবার রাতে পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। ১২ আগস্ট জাতীয় পরিষদের পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হতো। পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ায় দেশটিতে একটি সাধারণ নির্বাচনের পট প্রস্তুত হলো। জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে তিন দিনের মধ্যে দেশটিতে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হবে। তবে দুর্নীতির মামলায় সদ্য দণ্ডিত হয়ে কারাগারে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। খবর দ্য ডন, জিও নিউজ ও বিবিসির।

কারাদণ্ডে দণ্ডিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআইর চেয়ারম্যান ইমরান খান ২০১৮ সালে দেশটিতে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন তিনি। কিন্তু মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতা হারান। পরে তোশাখানা দুর্নীতির মামলায় দোষীসাব্যস্ত হয়ে তিন বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন তিনি। এরপর তাকে পাঁচ বছরের জন্য রাজনীতিতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। পাকিস্তানের নিয়মানুযায়ী, দোষীসাব্যস্ত কোনো ব্যক্তি দেশটির নির্বাচন কমিশনের বেঁধে দেওয়া সময়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন না।

পাকিস্তানে পার্লামেন্টে ভেঙে দেওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারই জাতীয় নির্বাচনের সময় দায়িত্ব পালন করে। সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে পাকিস্তানের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগে তিন দিনের সময় বেঁধে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। এ ছাড়া ৯০ দিনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের বন্দোবস্ত করতে বলেছেন।

এরই মধ্যে দেশটিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির কাছ থেকে একটি চিঠি পাওয়ার পর গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও জাতীয় পরিষদের বিরোধী দলীয় নেতা রাজা রিয়াজের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রীর মনোনয়ন নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হয়েছে। যদিও এই নির্বাচন আগামী বছর পর্যন্ত বিলম্বিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিদায়ী সরকার।

বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনে বেশি দেরি হলে তাতে জনঅসন্তোষ সৃষ্টি হতে পারে। ফলে দেশটিতে বিদ্যমান অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে। কিন্তু পাকিস্তানকে যেহেতু অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় রীতিমতো সংগ্রাম করতে হচ্ছে, সেহেতু এ নির্বাচন স্থগিত রাখার কথা চিন্তা করছে শাহবাজ সরকার। যদিও পাকিস্তানের এই অস্থিতিশীল পরিবেশ যুক্তরাষ্ট্রকেও সতর্ক অবস্থানে রেখেছে। হোয়াইট হাউস মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, সহিংসতার মতো ঘটনা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। এ ধরনের ঘটনা দেশটিকে আরও অস্থিতিশীল করে দিতে পারে।

অন্যদিকে পাকিস্তানে এমন আলোচনা আছে—নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার মূল কারণ হলো ইমরান খানের জনপ্রিয়তা। ক্ষমতাসীন পাকিস্তান মুসলিম লীগের (নওয়াজ) জোট নির্বাচনে জয়ের বিষয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী নয়। পাশাপাশি আইএমএফের সহযোগিতা সত্ত্বেও ব্যাপক মূল্যস্ফীতির প্রভাব পড়েছে সেখানে। এক সময় ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকলেও ইমরান এমনভাবে সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিরোধে জড়িয়েছেন যা তার আগে কোনো রাজনীতি করেননি। বিশ্লেষক রাসুল বখশ রাইসের মতে, গ্রেপ্তারের কারণে ইমরান খানের জনপ্রিয়তা আরও বাড়বে।

আরও খবর: আন্তর্জাতিক