প্রতিনিধি ৪ অক্টোবর ২০২৩ , ৪:১৫:৫৯ প্রিন্ট সংস্করণ
নেত্রকোনা প্রতিনিধি
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে মোবাইলে ফ্রি-ফায়ার গেম খেলে মানসিক ভারসাম্য হারানো এক যুবক সড়কে থাকা অন্তত ২০টি গাড়ি ভাঙচুর করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে মোহনগঞ্জ পৌর শহরের বসুন্ধরা মোড়ে এ ঘটনা ঘটান ওই যুবক। এ সময় রাস্তার পাশে থামানো মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ অন্তত ২০টি গাড়ি লাঠির আঘাতে ভাঙচুর করেন তিনি। ওই যুবকের নাম হারেছ রাকিব (২০)। তিনি উপজেলার বাহাম গ্রামের ফজল হকের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শৌখিন কমিউনিটি সেন্টারের সামনে থাকা একটি অটোরিকশা ও মাইক্রোবাসে প্রথম ভাঙচুর চালান রাকিব। পরে সড়ক দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে যেতে বসুন্ধরা মোড় পর্যন্ত সামনে যত গাড়ি পড়ে, সবই ভাঙতে শুরু করেন। একপর্যায়ে বসুন্ধরা মোড়ে ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির চালক ও মালিকরা রাকিবকে আটক করে তার দুই হাত একটি ভবনের সঙ্গে বেঁধে রাখেন। খবর পেয়ে পুলিশও সেখানে হাজির হয়।
মানসিক ভারসাম্যহীন রাকিবকে তার বাবার হাতে বুঝিয়ে দিয়ে পুলিশ চলে যায়। এ ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী বিষয়টি সুরাহা করবেন বলে ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্বস্ত করলে ভুক্তভোগীরাও রাকিবকে ছেড়ে দেন। পরে রাকিবকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার দুই পাশে গাড়ির ভাঙাচোরা গ্লাস পড়ে রয়েছে। কোনো কোনো ভাঙা গাড়ি সেখানেই রয়ে গেছে। ভাঙচুরের ঘটনায় কিছু সময়ের জন্য রাস্তায় গাড়ি চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। এসব দেখেতে উৎসুক মানুষের ভিড় জমে যায়।
বসুন্ধরা প্লাজার দোকানি প্রত্যক্ষদর্শী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ওই ছেলেটা অস্বাভাবিক আচরণ করছিল। হয়তো পাগল নয়তো অতিরিক্ত নেশা করেছে। হাতে থাকা লাঠি দিয়ে সড়কে থামানো সব গাড়ি ভেঙে দিয়েছে। লোকজন নিরুপায় হয়ে তাকে বেঁধে রেখেছে। ভাগ্য ভালো যে, কোনো মানুষকে আঘাত করেনি। শুনেছি, গতকাল বারহাট্টা এলাকায় একজন মানুষকেও পিটিয়ে চলে এসেছে ওই ছেলে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, রাকিব সুস্থ ছিল। প্রায় দুই বছর আগে মোবাইলে অতিরিক্ত মাত্রায় ফ্রি-ফায়ার গেম খেলে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। পরে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করানোর পর কিছুটা ভালো হয়। ছয় মাস ধরে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু এক সপ্তাহ আগে আবার রাকিবের মাথায় সমস্যা দেখা দেয়। গাড়ি ভাঙার বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করে দেব।
মোহনগঞ্জ থানার এসআই মো. মজিবুর রহমান বলেন, ছেলেটাকে মানসিক ভারসাম্যহীন মনে হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির কোনো মালিক এ বিষয়ে অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।