সারাদেশ

সাতক্ষীরায় পুলিশের উপর হামলা, আসামী ছিনতাই, গুলি বর্ষন, ৫ পুলিশ আহত

  প্রতিনিধি ৭ নভেম্বর ২০২২ , ৫:১৭:৪৩ প্রিন্ট সংস্করণ

 

সাতক্ষীরা অফিসঃ সাতক্ষীরার দেবহাটায় গ্রেপ্তারের পর পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে ডাকাতি ও অস্ত্র মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী শরিফুল ইসলাম ওরফে কালু (৪০) কে ছিনিয়ে নিয়েছে সন্ত্রাসীরা। রবিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার সন্ত্রাসী অধ্যুষিত খলিশাখালিতে এঘটনা ঘটে। এসময় সন্ত্রাসীদের হামলায় দেবহাটা থানার এসআই শরিফুল ইসলাম, এসআই শোভন দাশ, এএসআই আব্দুর রহিম গাজী, কনষ্টেবল ফরহাদ হোসেন ও কনষ্টেবল শাহজান আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে ৮ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে পুলিশ। এঘটনায় ছিনিয়ে নেয়া কালুসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৫০/৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে এসআই শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে দেবহাটা থানায় মামলা (নং-৮) দায়ের করেছেন। মামলার আসামীরা হলেন, খলিশাখালিতে অবস্থানরত নাংলা গ্রামের কালু গাজীর ছেলে গফুর মাস্তান (৪৭), নোড়ারচকের মৃত আকরাম গাজীর ছেলে ইসমাইল মেম্বর (৪০), তার অপর দুই ভাই মারুফ (৩২) ও মুজাহিদ (২৭), বর্তমানে খলিশাখালিতে অবস্থানরত নাংলার আয়ুব আলী গাজীর ছেলে শরিফুল ইসলাম ওরফে কালু (৪০), বাবুরাবাদের মৃত রুহুল আমিনের ছেলে আকরাম (৪৫), নোড়ারচকের মৃত মৃত আছেল উদ্দীনের ছেলে আবুল হোসেন গাজী (৪৭), কালাবাড়িয়ার মৃত আবু জাফরের ছেলে আসাদুল ইসলাম (৪০) এবং খলিশাখালীর মৃত বাক্কার গাজীর ছেলে মুদি সাইফুল (৪২)।

দেবহাটা থানার ওসি শেখ ওবায়দুল্যাহ গণমাধ্যমকে বলেন, সম্প্রতি উপজেলার দেবীশহর এলাকা থেকে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে কাটা রাইফেল, সাত রাউন্ড গুলি, দুটি রাম দা, রাউডি ও লাঠিসহ তিন ডাকাতকে গ্রেপ্তরা করা হয়। সেসময় ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় কালু ডাকাতসহ বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী। এঘটনায় ডাকাতি ও অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা হলে পলাতক আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করে আদালত। রবিবার দিবাগত রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার খলিশাখালিতে ওই অস্ত্র ও ডাকাতি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক কালু ডাকাতের অবস্থান নিশ্চিত করে পুলিশ। রাত আড়াইটার দিকে দেবহাটা থানা পুলিশের একটি দল খলিশাখালিতে অভিযান চালিয়ে কালু ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসছিল। পুলিশ সদস্যরা খলিশাখালির গফুর মাস্তানের বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছালেই গফুর মাস্তান ও ইসমাইল মেম্বরের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী অতর্কিত পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এসময় তারা পুলিশকে মারপিট করে আটক কালু ডাকাতকে ছিনিয়ে নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৫ রাউন্ড রাবার বুলেট ও ৩ রাউন্ড শর্টগানের গুলি বর্ষণ করে সন্ত্রাসীদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ।

পরে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে আহত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেন। এঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যহত রয়েছে উল্লেখ করে ওসি বলেন, গেল বছরের ১০ সেপ্টেম্বর ভোররাতে মুহুর্মহু গুলি ও বোমা ফাঁটিয়ে খলিশাখালি নামক ১৩শ বিঘা ব্যক্তি মালিকানাধীন রেকর্ডীয় জমি জবরদখলে নেয় কয়েক’শ ভূমিদস্যু, ডাকাত এবং সন্ত্রাসী। এরপর থেকে ওই ঘেরটি অপরাধীদের অভয়াশ্রম হয়ে উঠেছে। সংঘবদ্ধ এ অস্ত্রধারীদের আবাসস্থল মূলত খলিশাখালি। তারা দিনের বেলায় খলিশাখালিতে আত্মগোপনে থাকে এবং রাত নামলেই বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতিসহ দস্যুতা করে বেড়ায়। এসব সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের মুখে ওই জনপদের সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে। এমনকি তাদের গ্রেপ্তার করতে গেলে পুলিশের ওপরেও হামলা চালাতেও এসব সন্ত্রাসীরা পিছপা হচ্ছেনা বলেও জানান ওসি।

আরও খবর: সারাদেশ