সারাদেশ

শ্যামনগরে এলজিইডি বিভাগের কাজে তুঘলকি কান্ড

  প্রতিনিধি ১৭ মার্চ ২০২৪ , ১:০৫:৩৭ প্রিন্ট সংস্করণ

নীলাকাশ টুডে

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কুলতলি-হাজীপুর সংযোগ সড়কে কার্পেটিংয়ের কাজ করছে মাইন এন্টারপ্রাইজ নামীয় প্রতিষ্ঠান। আড়াই কিলোমিটার বিস্তৃত এ সড়ক জুড়ে বিছানো পুরানো ইটের পরিমান সাত লাখ ৯০ হাজার। দরপত্রের বিধি ও সরকারি আইন অনুযায়ী কাজ শেষে উক্ত ইটের ‘স্যালভেজ’ মুল্য ঠিকাদারের বিলের সাথে সমন্বয়ের কথা। এছাড়া সমুদয় ইট একই সড়ক পুনঃনির্মান কাজে ব্যবহারের সুস্পষ্ট নীতিমালা রয়েছে। এই বিষয়ে আজ রবিবার স্থানীয় একটি দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

ওই পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে কুলতলি-হাজীপুর সংযোগ সড়কের যাবতীয় ইট কলবাড়ি-নীলডুমুর সংযোগ সড়কে ব্যবহার করা হয়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ তুলছে। অভিযোগ উঠেছে কতৃপক্ষের যোগসাজশে কলবাড়ি-নীলডুমুর সংযোগ সড়কের কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক আব্দুল হাকিমের কাছে স্বল্প মুল্যে বিক্রি করা হয় উক্ত ইট।

একই ভাবে নির্মানাধীন উপজেলা সদরের মুক্তিযোদ্ধা সড়কের দু’পাশে থাকা এইচবিবি (হেয়ারিং বন্ড) এর ৩০ হাজারেরও বেশী ইট রাতরাতি গায়েব হয়ে গেছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে। এই পর্যায়ে শুধুমাত্র ড্রেণ নির্মান শেষ করেই কাজ স্থগিত রাখা হয়েছে দুই কোটি ৮২ লাখ টাকার জিওবি মেইনটেন্যান্স’র উক্ত কাজ। অভিযোগ উঠেছে অপ্রয়োজনীয় ডব্লিউবিএম বা ‘ম্যাকাডম’এর অজুহাতে ‘রিভাইস’ প্রস্তাবনা প্রেরণের জন্যই এমন কৌশল নেয়া হয়েছে। আবার যেনতেন ভাবে কাজ করতে যেয়ে একজন নির্মান শ্রমিকের মুত্যর পরও নিরাপত্তা বেষ্টনী ছাড়াই সম্পন্ন হয়েছে বাকি অংশের ড্রেণ নির্মানের কাজ। এছাড়া দু’পাশে বিস্তর জায়গা থাকা সত্ত্বেও উদ্ধারের উদ্যোগ না নিয়ে নামকা ওয়াস্তে সংকীর্ণ ভাবে নির্মিত হচ্ছে সদ্য পৌরসভায় উন্নীত এ জনপদের সবচেয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন সড়কটি।

 

তবে শুধুমাত্র উল্লেখিত কাজগুলোতেযে অনিয়ম ও দুর্নীতি হচ্ছে তা নয়। বরং অনিয়মের সে ধারা অব্যাহত রাখা হয়েছে সদরের এইচসি পাইলট বিদ্যালয় থেকে যমুনা খাল, ভুলোরমোড় থেকে সোনারমোড় ও নকিপুর বাজার থেকে পোস্ট অফিস মোড় পর্যন্ত ড্রেণ নির্মানসহ আরও অসংখ্য প্রকল্পে।
অনুসন্ধানে দেখা মিলেছে বংশীপুর কসাইখানা নির্মান কাজের নামে মাত্র দুই হাজার ইট কার্যস্থলে পোৗছালেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের অনুকুলে বরাদ্দের অর্থ ছাড় করা হয়েছে। একই ভাবে এইচসি পাইলট বিদ্যালয় থেকে যমুনাসহ অপর দুটি প্যাকেজের দুইশ ৬৪ মিটার ড্রেণ নির্মান কাজ শুরুর আগেভাগে বরাদ্দের ৭৫ শতাংশ অর্থ ছাড়করণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আবার বরাদ্দ ছাড়ের পর একটি অংশে কাজ শুরু হলেও সেখানে একপাশে স্টিল শাটার দিয়ে সেন্টারিং করা হলেও অপর পাশে গোজামিল দিয়ে কাজ চলছে।

 

এই বিষয়ে এলজিইডির শ্যামনগর উপজেলা শাখার প্রধান প্রকৌশলী জাকির হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, কুলতলি-হাজীপুর সংযোগ সড়কের ইট পাশে গচ্ছিত রয়েছে। আমার জানামতে সেখান থেকে কোন ইট কলবাড়ী-নীলডুমুর সড়কে যায়নি। একই ভাবে মুক্তিযোদ্ধা সড়কের ইট গোপালপুর পিকনিক কর্নার এলাকায় খোয়া তৈরী করে রাখা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সামান্য কিছু ভুলের কারনে গুরুত্বপুর্ন ঐ সড়কের বরাদ্দ রিভাইসের জন্য পাঠানো হয়েছে। কাজ শুরুর আগেই বরাদ্দ ছাড়ের সত্যতা নিশ্চিত করে তিনি বলেন, কাজ শুরু হয়নি, তবে হবে। এছাড়া ড্রেনগুলোর সেন্টারিং এর কাজে একপাশে শার্টার ব্যবহারের বিষয়টি তিনি অবগত নয় বলে স্বীকার করেন।

আরও খবর: সারাদেশ