সারাদেশ

শিশুকে খুঁজে বের করে কিশোরকে রক্ষা করলেন ওসি

  প্রতিনিধি ২৪ আগস্ট ২০২২ , ৩:৫৫:৩৫ প্রিন্ট সংস্করণ

 

নীলাকাশ টুডেঃ কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদারের মানবিকতায় রক্ষা পেল কিশোর আশিক (১৬)। কুমারখালী থানায় কিশোরের বিরুদ্ধে শিশু গুমের মামলা দায়ের হলেও তাকে আটক না করে আধুনিক প্রযুক্তি ও বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে উদ্ধার করেছেন লুকিয়ে থাকা শিশুকে। ৩২ দিন পর মঙ্গলবার উদ্ধারকৃত শিশুকে তার পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এলাকাবাসী জানান, গত ২২ জুলাই কুমারখালী বাটিকামারা গ্রামে বসবাসরত হাসিমপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুদ্দিনের ছোট ছেলেকে তার বড় ছেলে মারপিট করায় ছোট ছেলে তৌফিক (১০) বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নুরুদ্দিন মাস্টার বাটিকামারা গ্রামের বিভিন্ন জনকে জিজ্ঞেস করেন কেউ তার ছেলেকে দেখেছে কিনা? আশিক নামের কিশোর তাকে জানায় সন্ধ্যার পর তৌফিককে সে কুমারখালী রেলওয়ে প্লাটফর্মে বসে থাকতে দেখেছে।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নুরুদ্দিন মাস্টার আশিককে চাপ সৃষ্টি করে তার ছেলেকে ফেরত দেওয়ার জন্য। একপর্যায়ে নুরুদ্দিন মাস্টার কুমারখালী থানায় আশিকের বিরুদ্ধে মামলা দিতে গেলে ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার তাকে বুঝিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু তাতেও ক্ষান্ত হন না নুরুদ্দিন মাস্টার। তিনি কুষ্টিয়া র্যা ব-১২-তে অভিযোগ দেন। তারা খোঁজখবর নিয়ে আশিকসহ তাদের সহপাঠীদের বাড়ি থেকে কোথাও যেতে নিষেধ করেন।

এরই মধ্যে নুরুদ্দিন মাস্টার বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করে কুমারখালী থানায় কিশোর আশিককে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন এসআই নজরুল ইসলাম। ওসির নির্দেশে একাধিকবার খোঁজখবর নিয়ে তৌফিককে গুমের সত্যতা না পাওয়ায় আসামি আটক না করে এসআই নজরুল ইসলাম বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেন লুকিয়ে থাকা শিশুকে উদ্ধার করার জন্য। অবশেষে পঞ্চগড় থেকে শিশু তৌফিককে উদ্ধার করে মঙ্গলবার তার পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার জানান, শুরু থেকেই আমরা বুঝতে পেরেছিলাম শিশুটি বাড়ি থেকে পালিয়েছে। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের চাপে শেষ পর্যন্ত মামলা নিতে হয়েছে। একজন কিশোরের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ওকে আটক করলে আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে ওর জীবনের অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে- এ আশঙ্কায় ওকে আটক না করে ২৪ ঘণ্টা নজরদারিতে রাখা হয়েছিল। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম অত্যন্ত সিনসিয়ার অফিসার। তিনি অনেক কষ্ট করেছে লুকিয়ে থাকা শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য। শেষ পর্যন্ত আমরা শিশুটিকে উদ্ধার করেছি এবং তার পরিবারের কাছে বুঝে দেওয়া হয়েছে।

আরও খবর: সারাদেশ