সারাদেশ

বনের হরিণ জীবন বাঁচাতে আসলো লোকালয়ে

  প্রতিনিধি ১২ আগস্ট ২০২২ , ৭:১৪:১৪ প্রিন্ট সংস্করণ

 

নীলাকাশ টুডেঃ নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপসহ নিম্নাঞ্চল জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। অস্বাভাবিক জোয়ারের নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের প্রধান সড়ক, বাজারগুলো প্লাবিত হয়েছে, ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। বনের হরিণ জীবন বাঁচাতে লোকালয়ে প্রবেশ করছে বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে।

পানি ঢুকে পড়েছে বাড়িঘরে। বেড়িবাঁধ না থাকায় সহজে জোয়ারের পানি ডুকে প্লাবিত হয় পুরো নিঝুমদ্বীপসহ আশপাশের এলাকা। জোয়ারে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

এদিকে জোয়ারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার নলচিরা ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের বাহিরে বসবাস করা লোকজন। নলচিরা ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. ইউনুছ জানান, নলচিরার তুপানিয়া গ্রামের বেড়িবাঁধের বাহিরের প্রায় ২ শতাধিক পরিবারের বসতঘরে পানি উঠে গেছে। এতে রান্নাসহ দৈনন্দিন কাজে মানবেতর জীবনযাপন করছে তরা। নলচিরা ঘাট এলাকায় অনেকের দোকানে পানি উঠে মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে।

নিঝুমদ্বীপে কর্মরত দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থার সমন্বয়কারী নুরনবী জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু হয়ে প্রতিটি জোয়ারে পানি ঢুকে পড়ছে নিঝুমদ্বীপের প্রতিটি ওয়ার্ডে। প্রধান সড়কটি ৩ থেকে ৪ ফুট পানির নিছে তলিয়ে গেছে। ফলে ওই সড়কে কয়েকটি মোটরসাইকেল ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে ঝুঁকি নিয়ে পায়ে হেঁটে অনেকে নিঝুমদ্বীপের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে যাতায়াত করছে লোকজন।

নিঝুমদ্বীপে জোয়ারে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমন ধানের বীজতলা। কিছু দিন পূর্বে লাগানো এসব বীজতলা ৪-৫ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। কোথাও কোথাও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ক্ষেতে থাকা ধানের চারা।

নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল আফছার দিনাজ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিঝুমদ্বীপে প্রায় ৪০ হাজার লোকের বসবাস। ইউনিয়নটি সাগরের একবারে কাছে হলেও নেই কোনো বেড়িবাঁধ। যার ফলে জোয়ারের সময় চারদিক দিয়ে একসঙ্গে পানি এ ইউনিয়নে প্রবেশ করতে শুরু করে।

এ ব্যাপারে হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম হোসেন বলেন, পূর্ণিমার কারণে জোয়ারের পানিতে অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে নিঝুমদ্বীপ, নলচিরা ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের বাহিরের এলাকা ও চরাঞ্চল ৩-৪ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। আমরা সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাপ করে একটি তালিকা দেওয়ার জন্য বলেছি। জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে সহযোগিতা করা হবে।

এদিকে ৮-১০ হাজার মানুষ দুদিন ধরে পানিবন্দি থাকলেও প্রশাসন বা কোনো এনজিও কোনো প্রকার সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসেনি। এলাকায় বর্তমানে, খাদ্য, শুকনো খাদ্য, শিশুখাদ্য, গোখাদ্য বিশেষ করে নিঝুম দ্বীপে হরিণের খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। হরিণ লোকালয়ে প্রবেশ করছে।

নোয়াখালীর উপকূলীয় বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ফরিদ মিয়া শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত নিঝুম দ্বীপে জোয়ারের পানি ঢুকেছে কিনা বা কোনো হরিণ লোকালয়ে প্রবেশ করেছে কিনা তা তার কলেজে নেই বলে জানান। তিনি বলেন, খবর নিয়ে জানানো হবে।

এদিকে নিঝুম দ্বীপের রেঞ্জ অফিসার কয়েক দিন থেকে কর্মস্থলে হাজির নেই বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন।

আরও খবর: সারাদেশ