সারাদেশ

ফাগুনের হাওয়ায় গাঁদা ফুলে আগুন

  প্রতিনিধি ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ , ১০:৩২:২৮ প্রিন্ট সংস্করণ

 

যশোর অফিস

 

গানে গানে দ্রোহ ও প্রেমের কবি কাজী নজরুল ইসলাম বলে গেছেন, ‘হলুদ গাঁদার ফুল, রাঙা পলাশ ফুল/ এনে দে, এনে দে, নইলে বাঁধব না বাঁধব না চুল… কবি গানের এই লাইনেই জানিয়ে দিয়ে গেছেন বসন্তে নারীর জন্য গাঁদা ফুলের প্রয়োজনীয়তা।

একদিন বাদেই পয়লা ফাল্গুন, বসন্ত বরণ উৎসব ঘিরে গাঁদা ফুলের চাহিদা বাড়ছে। ফুলের রাজ্য খ্যাত যশোরের গদখালীর পাইকারি বাজারে গাঁদা ফুলের বাজার জমজমাট হয়ে উঠেছে। চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় অন্যান্য ফুলের পাশাপাশি গাঁদা ফুলের দামও বাড়ছে হু হু করে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এই ফুলের দাম বেড়েছে পাঁচ থেকে সাতগুণ পর্যন্ত।

 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে এ ফুলের দাম আরও বাড়বে। বসন্ত উৎসবের দিনে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস হওয়ায় এদিন গোলাপের চাহিদাও থাকে সর্বোচ্চ। ফুলচাষিরা বলছেন রেকর্ড সর্বোচ্চ দামে এ বছর গোলাপ বিক্রি হয়েছে। তবে বৈরী আবহাওয়ায় কম ফুল উৎপাদন এবং চড়া বাজারে ইন্ডিয়ান গোলাপের আগমনে তাদের মনে লোকসানের আশঙ্কা।

সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রেকর্ড সর্বোচ্চ দামে গদখালী বাজারে গাঁদা ফুল কেনাবেচা হয়েছে। প্রতি হাজার গাঁদা ফুল ৩০০ থেকে ৭০০ টাকা দরে কেনাবেচা হয়েছে। গত সপ্তাহে সমপরিমাণ ফুল ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। গাঁদা ফুলের এমন দামে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা ভীষণ খুশি। একই দিনে গোলাপের রেকর্ড দাম থাকলেও গতদিনের তুলনায় দাম কিছুটা কমেছে। এদিন গোলাপ বিক্রি হয়েছে ২০-২৫ টাকা। অথচ একদিন আগে রবিবার গোলাপ বিক্রি হয়েছিল মানভেদে ২৫-৩০ টাকা পর্যন্ত। চায়না গোলাপের দাম ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা।

এদিন প্রতিপিস রজনীগন্ধা বিক্রি হয়েছে ১২ থেকে ১৫ টাকা, রঙিন গ্লাডিউলাস প্রতিটি মানভেদে বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা, জারবেরা বিক্রি হয়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা, চন্দ্রমল্লিকা ৩ থেকে ৫ টাকা। ফুল বাঁধাইয়ের জন্য কামিনীর পাতা বিক্রি হয়েছে প্রতি আঁটি ৩০ টাকায়। জিপসির আঁটি বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকায়।

সকালে গদখালী ফুলের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, কাকডাকা ভোর থেকেই কৃষকেরা বড় বড় ঝুড়ি ও বস্তায় ভরে ভ্যানে করে গাঁদা ফুল নিয়ে এসেছেন মোকামে। যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশের ফুলের আড়তে তারা গাঁদা বিক্রি করছেন। কেউ কেউ ভ্যানের ওপর থেকে নিজেরাই গাঁদা ফুল বিক্রি করছেন। একদিকে চলে ফুলের বেচাকেনা অন্যদিকে নারীরা সুই সুতো দিয়ে শুরু করেন মালা গাঁথার কাজ। তাঁদের গাথা মালা বিভিন্ন পরিবহনে করে ঢাকাসহ দেশের জেলায় জেলায় পাঠানো হয়। এদিন গাঁদা ফুলের ভালো দাম পেয়ে অধিকাংশ কৃষকের মুখে চওড়া হাসি ফুটেছে। কৃষকরা বলছেন, এবার গাঁদা ফুলের দাম আরও বাড়বে।

পানিসারা গ্রামের কৃষক আরিফ হোসেন বলেন, সাড়ে ছয় হাজার গাঁদা নিয়ে হাটে এসেছি। প্রতি হাজার ফুল বিক্রি হয়েছে ৬৫০ টাকা দরে। সপ্তাহখানেক আগে এই ফুল বিক্রি করেছি প্রতি হাজার ১৫০ টাকা দরে।

 

আরও খবর: সারাদেশ