সারাদেশ

পুরোনো পেশায় ফিরছে আত্মসমর্পণকারী বনদস্যুরা!

  বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ৫:৩৯:২১ প্রিন্ট সংস্করণ

 

পুরোনো পেশায় ফিরে আবার সুন্দরবনের দাপিয়ে বেড়াচ্ছে আত্মসমর্পণ করা বনদস্যুরা। মঙ্গলবার ভোররাতে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের শ্যালা নদীসংলগ্ন সূর্যমুখী খাল থেকে অস্ত্র ও গুলিসহ নতুন গড়ে ওঠা ফজলু বাহিনীর প্রধানসহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন চার বনদস্যু।

এদের মধ্যে বাহিনীর প্রধান মো. ফজলু শেখ ২০১৮ সালে অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করা বনদস্যু শান্ত বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ডার ছিলেন। গত বছরও বনদস্যু ফজলু স্বাভাবিক জীবনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাত থেকে সহায়তা নিয়েছে।

বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক মঙ্গলবার দুপুরে তার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বাগেরহাট ডিবি পুলিশ ও মোংলা থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে গ্রেফতার বনদস্যুদের সবার বাড়ি বাগেরহাটের রামপাল উপজেলায়। তারা হলেন- রামপাল উপজেলার আড়ুয়াডাঙ্গা গ্রামের আহাদ আলী শেখের ছেলে বনদস্যু ফজলু বাহিনী প্রধান মো. ফজলু শেখ (৪২), ফজলু বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড শিকিরডাঙ্গা গ্রামের মোতালেব শেখের ছেলে মজনু শেখ (৩০), পেড়িখারী গ্রামের জোনাব আলী মোড়লের ছেলে শাহাদাত মোড়ল (৪০) ও জিগিরমোল্লা গ্রামের নজরুল শেখের ছেলে ফয়সাল শেখ (৩২)।

গ্রেফতার বনদস্যুদের কাছ থেকে একটি ওয়ান সুটার গান, একটি একনলা বন্দুক, সাত রাউন্ড গুলি, দুইটি রাম দা, একটি হাতুড়ি, একটি লোহার পাইপ, চারটি টর্চ লাইট ও একটি ডিঙি নৌকাসহ বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে।

বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, সম্প্রতি সময়ে সুন্দরবনে কয়েকটি গ্রুপ বনদস্যুতা শুরু করেছে বলে পুলিশের কাছে খবর আসে। এসব বনদস্যুরা সুন্দরবনের পেশাজীবীদের জিম্মি করে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাদের স্বজনদের কাছ থেকে অর্থ দাবি করে আসছিলেন। এদের মধ্যে আত্মসমর্পণ করা বনদস্যু শান্ত বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ডার মো. ফজলু শেখ নিজের নামে বাহিনী গড়ে সুন্দরবনের দাপিয়ে বেড়ানোর বিষয়টি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নিশ্চিত হওয়া যায়।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার ভোররাতে বনদস্যু ফজলু বাহিনীর অবস্থান শনাক্ত করে ডিবি পুলিশের ওসি সুরেশ চন্দ্র হালদার ও মোংলা থানার ওসি মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে যৌথ অভিযান চালিয়ে সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের শ্যালা নদীসংলগ্ন সূর্যমুখী খাল থেকে অস্ত্র ও গুলিসহ নতুন ফজলু বাহিনীর প্রধানসহ চার বনদস্যুকে গ্রেফতার করা হয়।

এসপি বলেন, বাহিনীর প্রধান মো. ফজলু শেখ ২০১৮ সালে আত্মসমর্পণ করা বনদস্যু শান্ত বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ডার ছিলেন। ওই সময় ফজলুসহ আত্মসমর্পণ করা দস্যুদের পুনর্বাসনের জন্য সরকার ব্যাপক সহযোগিতা করেছে। এমনকি গতবছরও এ ফজলু বাগেরহাটে সুন্দরবন দস্যুমুক্ত দিবসের অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাত থেকেও আর্থিক অনুদান নিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, গ্রেফতার ফজলু বাহিনীতে পাঁচ সদস্য ছিলেন। এর মধ্যে বাহিনী প্রধানসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পলাতক সদস্যকে আটকে অভিযান চলছে। এছাড়া আটক দস্যুদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ এবং এদের গড ফাদারদের চিহ্নিত করে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে। গ্রেফতারকৃত বনদস্যুদের নামে অস্ত্র আইনে জেলা ডিবি পুলিশ মোংলা থানায় মামলা দায়ের করেছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।

আরও খবর: সারাদেশ