সারাদেশ

অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন, সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ নিরব

  প্রতিনিধি ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ , ৬:৪০:০১ প্রিন্ট সংস্করণ

 

মোঃ রাজিব হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার

মানিকগঞ্জে শিবালয় উপজেলার তেওতা ইউনিয়নে যমুনা নদীতে চলছে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন কতিপয় মহলকে ম্যানেজ করা অভিযোগ উঠেছে। নিরব দর্শকের ভূমিকায় সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ। এই বিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সুদৃষ্টি কামনা করছেন সচেতন মহল।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, তেওতা ইউনিয়নে নিহালপুর হইতে জাফরগঞ্জ পর্যন্ত ড্রেজার মালিকরা রাত দিন অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছে বালুখেকোরা। নদীতে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন করা হলেও রহস্যজনক কারণে নিরব রয়েছে প্রশাসন। স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারির অভাবে সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব । হুমকির মুখে পড়ছে সরকারের কোটি কোটি টাকার তৈরী করা বেড়িবাঁধসহ মানুষের বসত বাড়ি।

অপরদিকে ওইসব স্থানে চুরি করে বালু নেয়ার জন্য অবৈধ ড্রম ট্রাক, ট্রাক্টরের সারিবদ্ধ ভাবে লম্বা লাইন দেখেই মনে হয় এলাকায় বালু উত্তোলনের মহাউৎসব চলছে। যত্রতত্র ভাবে বালু উত্তোলনের ফলে রাস্তাঘাট ও বেড়িবাঁধ নষ্ট হয়ে একদিকে যেমন মানুষের চলাচলে অযোগ্য হয়ে পড়েছে অন্য দিকে ধুলা-বালির কারনে মানুষের বাড়ি-ঘরে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। অনেকেই এসব ধুলা বালির মধ্যে চলাচল করায় নানা ধরনের শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, সড়ক দিয়ে বেপোরোয়া ভাবে ডাম্বার ট্রাক ও ট্রাক্টর চলাচল করায় দুর্ঘটনারও আংশকা করছে স্থানীয়রা।

ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসী জানান, তাদের চলাচলের রাস্তাঘাট, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নষ্ট হলেও দেখার কেউ নেই। বালুদস্যুরা অসাধু কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সাথে আতাঁত করে নির্বিকারে বালু ব্যবসা করে আসছে। ইউনিয়নের যমুনা নদীর পাড় ঘেষেই বেড়িবাঁধ ও মানুষের বসত বাড়ি উপেক্ষা করে প্রায় ৫ টি গ্রামের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ২০টি অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছে নিহালপুরে রুবেল মিয়া, সমেজ ঘরে ফারুক, আরিফ, মানিক ও পান্নু ফকির, দক্ষিন তেওতার শ্যাম মিয়া, সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের , জালাল উদ্দিন, বিশ্বজিৎ ও আবুল মিয়া, সাতুরিয়া গ্রামে হালিম, মুন্না ও টুকু, জাফরগঞ্জ গ্রামে নান্নু মিয়া, ফরহাদ ও হারুন। তারা প্রশাসনের কতিপয় অসাধু ব্যক্তিদের সহযোগীতায় বালু উত্তোলন করছে। বালু উত্তোলনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী কথা বলতে সাহস পাচ্ছে না।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, যমুনা নদীতে অসাধু বালু উত্তোলনকারীরা ক্ষমতাসীন দলের ব্যক্তি হওয়ায় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই বালু উত্তোলন করে। নদীর পানি প্রবাহ কমে গেলে বালু উত্তোলনের ফলে বিভিন্ন স্থানে ভাঙন সৃষ্টি হয়। একই সঙ্গে বসতভিটাও পড়ে হুমকির মুখে। অপর দিকে ড্রেজার মেশিনের বিকট শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এ অঞ্চলের মানুষ, রাতের বেলায় ঘুমাতে পারছে না। এ বিষয়ে প্রশাসনকে জানিয়েও কোন প্রতিকার পাইনি এলাকাবাসী। অভিযোগ উঠেছে মাঝে মধ্যে প্রশাসনের লোকজন দু-একটি ড্রেজারে লোক দেখানো অভিযান চালায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ড্রেজার ব্যাবসায়ী জানান, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে আমরা ড্রেজার চালাচ্ছি।

ড্রেজার ব্যবসায়ী হালিমের সাথে মুঠো ফোনে কথা বললে তিনি প্রশাসনের ম্যানেজের কথা অস্বীকার করে ফোন কেটে দেন।

এবিষয়ে শিবালয় উপজেলা সহকারী ভূমি কমিশনার মোঃ আনিছুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমরা অবগত আছি, অবৈধ বালু উত্তোলনে অভিযান অব্যহত রয়েছে, অব্যহত থাকবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ বেলাল হোসেন বলেন, উপজেলার কোন কর্মকর্তা অবৈধ দেন দেনের সাথে কোন ভাবেই সম্পৃক্ত নয়। শিবালয় উপজোলার অবৈধ বালু ও মাটি উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যহত রয়েছে। আগামী সপ্তাহে আইন-শৃঙ্খলা মিটিংয়ে আমি অবৈধ ড্রেজারের বিষয়টি উপস্থাপন করে এর সাথে যারা সম্পৃক্ত আছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করব।

আরও খবর: সারাদেশ