সারাদেশ

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ট্রেনের টিকিট না পেয়ে চিঠি লিখলেন!

  প্রতিনিধি ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৬:৪৩:৩৫ প্রিন্ট সংস্করণ

 

নীলাকাশ টুডেঃ বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের টিকিট না পেয়ে অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করে খোলা চিঠি লিখেছেন। রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা চলছে।

ওই শিক্ষকের নাম মো. মোবারক আলী শেখ। তিনি নওগাঁ সদর উপজেলার দোগাছী গ্রামের বাসিন্দা এবং নওগাঁ কেডি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক।

 

চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘সান্তাহার রেলওয়ে টিকিট কাউন্টারে দাঁড়িয়েছি রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা ২২ মিনিটে। ১ নং কাউন্টারে আমি প্রথম ব্যক্তি। আশা ছিল ২টি এসি স্নিগ্ধা টিকিট পাব। ভ্রমণের তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর কুড়িগ্রাম। ৮টায় কাউন্টার খোলা হলো। টিকিট যিনি দিচ্ছেন উনি একজন নারী। বললাম ‘মা’ আমাকে এসি ২টা টিকিট দেন। ওনার ওপরের বস একজন, যিনি টিকিট কাউন্টারের হেড।

তার নির্দেশ মোতাবেক আমাকে টিকিট না দিয়ে বসের জন্য এসি স্নিগ্ধার সব টিকিট রেখে দিলেন। আমি কয়েক বার তাদের কাছে অনুরোধ করেও ব্যর্থ হয়েছি। আমার বয়স ৬৫ বছর পেরিছে। আমি একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। বসের কথা রানীনগরের এসিল্যান্ড স্যারের সব টিকিট লাগবে। তাই তিনি আমাকে এসি স্নিগ্ধার দুটি টিকিট দিতে পারবেন না। আমি অনেক দুঃখ পেয়েছি। কষ্ট পেয়েছি। বুঝাতে পারছি না নিজের মনকে। কাউন্টার থেকে বেরিয়ে বাসায় আসলাম।’

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোবারক আলী শেখ বলেন, আমি পত্রে যা লিখছি সব কিছুই ঠিক। আমার চাওয়া ছিল শুধু দুটি টিকিট। আমি মনে করি, যারা বার্ধক্যজনিত বা বয়স্ক, তারা টিকিট কিনতে লাইনে দাঁড়ালে সবাইকে তাদের সম্মান করা উচিত। তিনি শিক্ষক বা যে শ্রেণির মানুষই হোক না কেন। চিঠি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে কয়েকটি জায়গা থেকে ট্রেনের টিকিট দেওয়ার কথা বলে আমাকে ফোন করা হয়েছিল, কিন্তু আমি সেগুলো প্রত্যাখ্যান করেছি।

 

সান্তাহার স্টেশনের বুকিং সহকারী নাসরিন সুলতানা বলেন, স্টেশনের দুটি কাউন্টার থেকেই প্রতিদিন নিয়মিত এবং অগ্রিম টিকিট দেওয়া হয়। তার চাহিদা ছিল এসি চেয়ারের দুটি টিকিট কিন্তু আমি কম্পিউটারে যখন সার্চ দেই তখন একটি টিকিট দেখা যায়। যেহেতু সিট নেই, এজন্য তাকে এসি কেবিনের কথাও বলেছিলাম। কিন্তু তিনি নিতে চাননি। তিনি অন্য কোনো ট্রেনের টিকিটও নিতে চাননি। পরে তিনি ফেসবুকে ভুল তথ্য দিয়েছেন। আমি নাকি এসি টিকিট প্রিন্ট করে বসের হাতে দিয়েছি। যা আমার কাছেও দুঃখজনক বলে মনে হচ্ছে। সে সময় আমার পাশের কাউন্টার থেকে কয়েকটি এসি টিকিট বিক্রি হয়েছে। তিনি কেন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন, আমি কিছু বুঝতে পারছি না।

স্টেশনের প্রধান বুকিং সহকারী মনিরুল করিম বলেন, আমরা ওই শিক্ষককে টিকিট দেওয়ার অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু দেখা যায় তার চাহিদামতো টিকিট নেই। অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার পর থেকে ওই কাউন্টার থেকেও টিকিট বিক্রি করা হয়।

সান্তাহার রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার রেজাউল করিম ডালিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই দিন টিকিট বিক্রিয়ের সময় কী হয়েছিল তা আমার জানা নেই। তবে ফেসবুকে একটি চিঠি দেখে আমি বিষয়টি জানতে পেরেছি।তবে এসব ছোটখাটো বিষয়ে কিছু বলার নেই আমার।

আরও খবর: সারাদেশ