সারাদেশ

অপহরণের সাড়ে ৩ মাস পর পুঁতে রাখা লাশ উদ্ধার

  প্রতিনিধি ২ জুন ২০২২ , ৮:০১:৩৮ প্রিন্ট সংস্করণ

 

নীলাকাশ টুডেঃ কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ব্যবসায়িক বিরোধের জেরে শালু মিয়াকে (৩৫) অপহরণের ৩ মাস ২০ দিন পর মাটিতে পুঁতে রাখা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। অপহরণ, হত্যা এবং লাশ গুমের চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় পুলিশ স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে।

বৃহস্পতিবার (২ জুন) বিকালে উপজেলার বাঘেরহাটের দক্ষিণ পাশের টেকানী গ্রামের জিন্জিরাম নদীরপাড় থেকে আসামিদের উপস্থিতিতে মাটি খুঁড়ে লাশ উদ্ধার করা হয়।

রৌমারী থানা সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে শালু মিয়াকে (৩৫) অপহরণ করে গুম করার অভিযোগ ওঠে। পরে ২৯ এপ্রিল স্বামীকে অপহরণের অভিযোগ এনে ইউপি সদস্য জাকির হোসেন, খয়বর আলীসহ অজ্ঞাত ৩ জনকে আসামি করে রৌমারী থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন স্ত্রী রেজেকা খাতুন।

এ ঘটনায় গত ৩০ মে রাতে মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে ইউপি সদস্য জাকির হোসেনকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাকে রৌমারী থানায় এনে ৩১ মে কুড়িগ্রাম আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়।

গ্রেফতারকৃত জাকির হোসেন উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও একই ইউনিয়নের চর কাউয়ারচর (বাঘের হাট) গ্রামের সোহরাব আলীর ছেলে। এছাড়া গ্রেফতারকৃত খয়বর আলী (৩২) রৌমারী উপজেলার ঝগড়ার চরের ছলে হকের পুত্র এবং জিয়া (৫০) একই উপজেলার কাউয়ার চরের তালেবের পুত্র।

নিহত শিকার শালু মিয়া একই ইউনিয়নের কাউয়ারচর গ্রামের মৃত চাঁন মণ্ডলের ছেলে।

জাকির হোসেনের দেয়া তথ্যসূত্র ধরে বুধবার (১ জুন) ঢাকায় অভিযান চালিয়ে শালু মিয়া হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত খয়বর আলী ও জিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। রৌমারীতে এনে বৃহস্পতিবার (২ জুন) বিকালে জিন্জিরাম নদীরপাড় থেকে মাটি খুঁড়ে শালু মিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

হত্যার শিকার শালু মিয়ার স্ত্রী রেজেকা খাতুন বলেন, আমার স্বামী শালু মিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ইউপি সদস্য জাকির হোসেনের ব্যবসায়িক বিরোধ চলে আসছিল। এরই সূত্র ধরে চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিষয়টি মীমাংসার জন্য জাকির হোসেন আমার স্বামীকে ফোনে দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের সুইচগেট এলাকায় আসতে বলেন। আমার স্বামী তার ফোন পেয়ে দ্রুত ওই স্থানে চলে যান। আমিও তার পিছু পিছু সেখানে যাই।

তিনি বলেন, গিয়ে দেখি জাকির হোসেন, খয়বর আলীসহ অজ্ঞাত আরও দুই তিন জন সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করছিলেন। তাদের সঙ্গে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে আমার স্বামীকে জোরপূর্বক তারা তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না। পরে তারা নানা ধরনের টালবাহানা করতে থাকেন। তারা তাকে অপহরণের পর খুন করে লাশ গুম করেছে। আমি খুনিদের ফাঁসি চাই।

এ বিষয়ে রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোন্তাছের বিল্লাহ জানান, গত ৩০ মে মামলার প্রধান আসামি ইউপি সদস্য জাকির হোসেনকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়। বুধবার (১ জুন) ঢাকায় অভিযান চালিয়ে খয়বর আলী ও জিয়াকে গ্রেফতার করে রৌমারীতে এনে তাদের দেয়া তথ্যমতে শালু মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এ অপহরণ ঘটনার রহস্য উদঘাটনের মধ্য দিয়ে পুলিশের প্রচেষ্টা সফল হয়েছে। এখন আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আরও খবর: সারাদেশ