লন্ডন থেকে যে বার্তা নিয়ে এলেন বিএনপির নেতারা


MD Nuruzzaman প্রকাশের সময় : মে ২০, ২০২৩, ৫:২৯ অপরাহ্ন /
লন্ডন থেকে যে বার্তা নিয়ে এলেন বিএনপির নেতারা

 

 

সম্প্রতি বিএনপি মধ্যম সারির অন্তত ২০ জন নেতা লন্ডন সফর করেছেন। এখনো কয়েকজন সেখানে রয়েছেন। তারা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করেছেন। দলীয় নেতাদের বাইরেও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিভ রহমান পার্থও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করেছেন। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এসব বিষয় গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে।

লন্ডন থেকে দেশে ফিরে আসা অন্তত তিনজন নেতার সঙ্গে গণমাধ্যমকের কথা হয়েছে। সেই সূত্রে জানা গেছে, তারা মূলত আন্দোলন ও নির্বাচন প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের মনোভাব জানার চেষ্টা করেছেন। একই সঙ্গে নানা দিকনির্দেশনাও পেয়েছেন। তবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বর্তমান সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনে না যাওয়ার বিষয়ে অনড় অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। কঠোর আন্দোলনের বার্তা দিয়ে তা সফলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার নির্দেশনাও দিয়েছেন।

 

রোববার লন্ডন থেকে দেশে ফিরেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের কাছে এখন নির্বাচন নিয়ে কোনো আগ্রহ নেই। সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ দশ দফা দাবিতে আমরা আন্দোলনের মধ্যে আছি। এ নিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী জনগণকে সম্পৃক্ত করে আন্দোলন করার জন্যই আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

এদিকে ঢাকা মহানগরে আন্দোলন জোরদার করতে দায়িত্বশীল নেতাদের নির্দেশ দিয়েছে হাইকমান্ড। মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ৬ দিনব্যাপী পদযাত্রা ও জনসমাবেশ কর্মসূচি পালন করবে। এসব কর্মসূচি ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। কর্মসূচি সফল করতে ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় নেতাদের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় চলমান আন্দোলনের পক্ষে জনমত গড়তে শান্তিপূর্ণ জনসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। গায়েবি মামলায় গ্রেফতার, পুলিশি হয়রানি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, লোডশেডিং, আওয়ামী লীগ সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদ ও পূর্বঘোষিত ১০ দফার পক্ষে সমর্থন জানাতে দেশের মানুষ চলমান কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেবে।’

দলটির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘দেখুন, দেশের বেশিরভাগ মানুষ এখন এ সরকারের দুঃশাসনে চরম ক্ষুব্ধ। ভোটের অধিকার হারানো ছাড়াও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ নানা কারণে সাধারণ মানুষ এখন রাস্তায় নামতে চায়। ফলে বিএনপির এবারের কর্মসূচি গণবিক্ষোভ থেকে গণঅভ্যুত্থানের পথে যাত্রা করবে।’ তিনি বলেন, ‘গ্রেফতার ও মামলা-হামলায় আমরাই বেশি ভুক্তভোগী। তাই দলের পক্ষ থেকে এককভাবে এ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

জানা গেছে, আপাতত একক কর্মসূচি দিয়েই মাঠে থাকবে বিএনপি। জনসমাবেশ শেষে দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যেও ভিন্ন ধরনের কর্মসূচি দেওয়া হবে। সমমনা দল ও জোটও নিজস্ব কর্মসূচি দিয়ে মাঠে থাকবে। জুনের মাঝামাঝিতে ফের যুগপৎ আন্দোলনে নামার পরিকল্পনা বিএনপিসহ সমমনাদের। এর মধ্যে নিজেদের দূরত্ব কমিয়ে ঐক্যের ওপর জোর দেবেন তারা। অভিন্ন দাবিতে ‘যৌথ ঘোষণাপত্র’ নিয়েও সমমনাদের সঙ্গে বিএনপির আবার বৈঠকের কথা রয়েছে। যা চলতি মাসেই চূড়ান্ত হতে পারে।