ভারতে চলছে সহিংসতা, ‘দেখামাত্র গুলি’র নির্দেশ


MD Nuruzzaman প্রকাশের সময় : মে ৪, ২০২৩, ৫:৪৮ অপরাহ্ন /
ভারতে চলছে সহিংসতা, ‘দেখামাত্র গুলি’র নির্দেশ

 

 

উত্তর–পূর্ব ভারতের মণিপুর রাজ্যে চলমান সহিংসতার মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা না গেলে ‘দেখামাত্র গুলি’র নির্দেশ জারি করেছেন রাজ্যপাল অনুসূয়া উইকে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জারি করা এ নির্দেশে বলা হয়, চূড়ান্ত পরিস্থিতিতে, যখন আর কোনো উপায় কাজে আসবে না, সেই সময় দেখামাত্র গুলি চালানো যেতে পারে।

বিভিন্ন জেলার শাসক, মহকুমা শাসক এবং কার্যনির্বাহী শাসককে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সহিংসতাপ্রবণ এলাকাগুলোতে ইন্টারনেট, সাধারণ মানুষের জমায়েত এবং যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে মণিপুরের সমতলের বাসিন্দা মেইতেই সম্প্রদায়ের সঙ্গে কুকি এবং নাগা জনগোষ্ঠীর নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীর বিরোধ চলছে। মেইতেই সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিনের দাবি তফসিলি উপজাতিদের তালিকাভুক্ত হওয়া। সম্প্রতি হাইকোর্ট মেইতেই সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতিভুক্তদের তালিকায় আনা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেন। এরপরই নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য।

হাইকোর্টের নির্দেশের প্রতিবাদে বুধবার চূড়াচাঁদপুর জেলার তোরবাঙে ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন মণিপুর’ (এটিএসইউএম) ‘আদিবাসী সংহতি পদযাত্রা’র ডাক দেয়। সেখান থেকে সহিংসতার সূত্রপাত। গতকাল রাতেই নিয়ন্ত্রিত ইম্ফল পশ্চিম, কাকচিং, থৌবাল, জিরিবাম ও বিষ্ণুপুর জেলা এবং ক্ষুদ্র জাতিসত্তানিয়ন্ত্রিত চুরাচান্দপুর ও কাংপোকপি ও তেংনুপাল জেলায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। একই সঙ্গে রাজ্যে মুঠোফোন ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

 

 

কয়েক দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সেখানকার বাড়িঘর, দোকানপাটে আগুনের ছবিতে ভেসে যাচ্ছে। অনেকেই রাজ্যের শান্তি স্থাপনের আহ্বান জানিয়েছেন। এ সহিংসতা রাজধানী ইম্ফলেও ছড়িয়ে পড়ে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে বৃহস্পতিবার সকালে সেখানে ফ্ল্যাগ মার্চ করেছে সেনাবাহিনী। রাপিড অ্যাকশন ফোর্স ও দাঙ্গা পুলিশের প্রায় ৫০০ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তাঁরা বুধবার থেকে থাকা সেনাবাহিনী, আসাম রাইফেলস, কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স এবং রাজ্য পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন।

এরই মধ্যে সহিংসতাপ্রবণ এলাকাগুলো থেকে ৯ হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। প্রতিরক্ষা বিভাগের একজন মুখপাত্র জানান, প্রায় পাঁচ হাজার মানুষকে চূড়াচাঁদপুরে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে, দুই হাজার জনকে ইম্ফল ভ্যালিতে আর দুই হাজার জনকে সীমান্তবর্তী শহর তেংগুপাল জেলার মোরেহতে রাখা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালের দিকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ বলেন, ‘রাজ্যের পরিস্থিতি স্বাভাবিকের দিকে যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।…আমরা আমাদের জনগণের জীবন ও সম্পদ রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর।’ এ ছাড়া এন বীরেন সিংহ ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানিয়েছেন।