বুধবার থেকে যে ৯ দফা নিয়ে মাঠে আসছে বিএনপি


MD Nuruzzaman প্রকাশের সময় : অক্টোবর ৮, ২০২২, ৮:৩৩ পূর্বাহ্ন /
বুধবার থেকে যে ৯ দফা নিয়ে মাঠে আসছে বিএনপি

 

নীলাকাশ টুডেঃ দশ সাংগঠনিক বিভাগে সমাবেশের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করার পাশাপাশি সরকারবিরোধী আন্দোলনে জনসম্পৃক্ত করার ওপর জোর দিচ্ছে দলটি।

৮২ সাংগঠনিক জেলা ও এর অধীনের ইউনিটে এসব সমাবেশ সফল করতে দফায় দফায় বৈঠক করছেন নেতারা। কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে ১০টি শক্তিশালী টিম। যেখানে সংশ্লিষ্ট বিভাগের নির্বাহী কমিটির সদস্য, সাবেক এমপি, সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকসহ জেলা নেতাদের রাখা হয়েছে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ ৯ দফা দাবিতে হবে এ সমাবেশ।

এর আগে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে দাবি সংবলিত ৩০ লাখ লিফলেট ও পোস্টার তৈরি করা হয়েছে, যা দু-একদিনের মধ্যে সারা দেশে পাঠানো হবে। ‘একদলীয় আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান’ শিরোনামে লিফলেট ও পোস্টারে গুলিতে নিহত নূরে আলম, আব্দুর রহিম, শাওন প্রধান, শহিদুল ইসলাম শাওন ও আব্দুল আলমের ছবিও রাখা হয়েছে। বিএনপি সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।

নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়াও ৯ দফা দাবির মধ্যে আছে-‘খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি; চাল-ডাল, জ্বালানি তেল, গ্যাস-বিদ্যুৎসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানো; গুম-খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ; শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস ও শিক্ষা খাতে ভয়াবহ দুর্নীতি-অনিয়ম বন্ধ; দুর্নীতির রাহুগ্রাসে ভঙ্গুর স্বাস্থ্য খাতের হরিলুট বন্ধ; ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল, সাংবাদিকসহ সাধারণ নাগরিকদের মামলায় হয়রানি বন্ধ; ব্যাংকিং খাতে লুটপাট, বিদেশে টাকা পাচার, শেয়ারবাজার লুণ্ঠনের অর্থ উদ্ধার এবং কৃষক, শ্রমিক, নিম্নবিত্ত মানুষের ন্যায্য দাবি মানতে হবে।’

বুধবার থেকে এই সমাবেশ শুরু হবে। শুরুর দিন ১২ অক্টোবর চট্টগ্রাম, ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহ, ২২ অক্টোবর খুলনা, ২৯ অক্টোবর রংপুর এবং ৫ নভেম্বর বরিশালে সমাবেশ হবে। ১২ নভেম্বর ফরিদপুর, ১৯ নভেম্বর সিলেট, ২৬ নভেম্বর কুমিল্লা, ৩ ডিসেম্বর রাজশাহী এবং সবশেষে ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় হবে মহাসমাবেশ। ১ অক্টোবর থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত এসব বিভাগের সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ৮২ সাংগঠনিক জেলার শীর্ষ দুই নেতাকে নিয়ে গুলশান কার্যালয়ে মতবিনিময় সভা করেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা।

এ সময় লন্ডন থেকে ভার্চুয়াল সভায় অংশ নেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এতে সব সমাবেশে সর্বোচ্চসংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতি চেয়েছে দলটির হাইকমান্ড। এজন্য নানা দিকনির্দেশনা দেন তিনি। একই সঙ্গে জেলা ও মহানগরে কোনো কোন্দল থাকলে তা সমাধানের ওপর জোর দেন হাইকমান্ড।

সমাবেশে সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ ভাবে অংশ নেওয়ার বিষয়ে যা যা দরকার, তা করতে নেতাদের নির্দেশও দেন দলটির হাইকমান্ড। ওই সভার পর সব সাংগঠনিক জেলার নেতারা নিজ এলাকায় ইতোমধ্যে চলে গেছেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে টিমগুলোও বিভাগে প্রস্তুতি সভা করছে। জেলা শাখার নেতারা সংশ্লিষ্ট থানা, উপজেলা, পৌর ও ওয়ার্ডে কর্মী সভাও শুরু করেছেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ও মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা কেন্দ্র থেকে ২০ লাখ লিফলেট ও ১০ লাখ পোস্টার সব সাংগঠনিক জেলায় পাঠিয়ে দেব। এছাড়াও জেলার নেতাদের দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তারাও স্থানীয় ভাবে পোস্টার ও লিফলেট তেরি করবেন। সমাবেশের আগে জনসচেতনতার জন্য পোস্টার লাগানো হবে। বিতরণ করা হবে লিফলেট।

তিনি আরও বলেন, বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপির মিডিয়া সেলেরও কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। সব সমাবেশই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিডিয়া সেলের ফেরিফাইড পেজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা করা হবে।

বিএনপির ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, তৃণমূলের ধারাবাহিক কর্মসূচিতে দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ যেভাবে অংশগ্রহণ করেছেন তাতে আমরা অনেক আশাবাদী। বিভাগীয় সমাবেশেও বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেবেন। ঢাকা বিভাগের মহাসমাবেশ সফলে যা যা করা দরকার, তা করা হচ্ছে। এ বিভাগের অন্তর্গত সব জেলার নেতারা ইতোমধ্যে প্রস্তুতি সভা শুরু করেছেন।