বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ‘ছিনতাই’!


MD Nuruzzaman প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ৯, ২০২৩, ৫:৪৯ অপরাহ্ন /
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ‘ছিনতাই’!

 

নীলাকাশ টুডেঃ এক কেন্দ্রীয় নেতাকে ছিনতাইয়ের অভিযোগ করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক গোলাম জাকারিয়া জাকা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকতকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।

সোমবার বেলা ১১টায় টাউন ক্লাব মিলনায়তনে বিএনপির ১০ দফা এবং রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা নিয়ে ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণধর্মী আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়ার।

একই সময়ে শহরের সোনার মোড়ে একই কর্মসূচি নিয়ে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে অপর একটি গ্রুপ আলোচনা সভার আয়োজন করে। সেখানেও প্রধান অতিথি করা হয় বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়াকে।

এ অবস্থায় প্রধান অতিথিকে নিজেদের আলোচনা সভায় নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে রীতিমতো মল্লযুদ্ধে অবতীর্ণ হয় জেলা বিএনপির দুই গ্রুপ।

আহবায়ক জাকা গ্রুপের নেতাকর্মীদের অভিযোগ রাজশাহী বিমানবন্দর থেকে আবুল খায়ের ভূঁইয়াকে আনতে গাড়ি পাঠানো হয়েছিল; কিন্তু সেখানে বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন শওকত নেতাকে ছিনতাই করে নিয়ে চলে যান। পরে সদস্য সচিব রফিক গ্রুপের অনুষ্ঠানে আবুল খায়ের ভূঁইয়াকে নিয়ে উপস্থিত হন।

এদিকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রবেশদ্বার দ্বারিয়াপুরে প্রধান অতিথি আবুল খায়ের ভূঁইয়াকে গ্রহণ করতে অবস্থান নেয় বিএনপির দুই গ্রুপ। তবে সড়কপথে আবুল খায়ের ভূঁইয়ার গাড়ি আসলেও তার গাড়িটি ফাঁকা ছিল। দ্বারিয়াপুর থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়ক বাদ দিয়ে তাকে ভিন্নপথে নিয়ে যাওয়া হয় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে জেলা শহরের সোনার মোড়ের জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ের সভায়। সেখানে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।

অন্যদিকে আহবায়ক জাকা গ্রুপের সভায় প্রধান অতিথি উপস্থিত না হওয়ায় সভাটি একরকম পণ্ড হয়ে যায়।

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকা থেকে চিঠি দিয়ে আমার নেতৃত্বে প্রোগ্রাম করার নির্দেশনা দিয়েছে। সে অনুযায়ী আমরা প্রোগ্রাম করেছি।

নেতাকে ছিনতাইয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, পলিটিক্যাল কোনো নেতাকে কি ছিনতাই করা যায়? এগুলো সঠিক কথা নয়। তিনি আমাদের প্রোগ্রামে এসে অংশগ্রহণ করেছেন।

আহবায়ক গোলাম জাকারিয়া জাকা বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়ার আমাদের সভায় আসার কথা ছিল, সেভাবেই তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। সেজন্য আমি বিমানবন্দরে গাড়িও পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে শাহিন শওকত তার গুণ্ডা বাহিনী নিয়ে আমাদের লোকজনকে মারধর করে নেতাকে ছিনতাই করে নিয়ে চলে যায়। এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা বিএনপির ইতিহাসে ঘটেনি। সংগঠনবিরোধী কার্যক্রম করায় শাহিন শওকতকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় অবাঞ্ছিত ঘোষণ করা হয়েছে।

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত বলেন, বিমানবন্দরের শত শত মানুষের মধ্যে কি নেতাকে ছিনতাই করা যায়? এটা সম্ভব? এটি একটি অবান্তর ও অলীক প্রসূত কথা।

অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার বিষয়ে তিনি বলনে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ আমার চার পুরুষের ভিটা। সেখানে আমি সগৌরবে ও সদর্পেই যাব এটাই স্বাভাবিক। আর রাজনীতিতে অবাঞ্ছিত কথাটা ব্যবহৃত হয় তবে এটি একটি আবেগ প্রসূত কথা। রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসেবে আমি কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী নেতাকে রিসিভ করেছি।

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া বলেন, আমি এই জেলার রাস্তাঘাট তেমনভাবে চিনি না। নেতাকর্মীরা আমাকে যেভাবে নিয়ে এসেছেন, আমি সেভাবেই একটি সভায় যোগদান করেছি। জেলা বিএনপির ব্যানারে একই প্রোগ্রাম দুই জায়গায় হতে পারে না। একটি পক্ষকে ত্যাগ স্বীকার করতে হতো। আমি গোলাম জাকারিয়ার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলব। বিএনপিতে কোনো দলীয় কোন্দল নেই বলেও জানান এই নেতা।