বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতির পেছনে কারণ কি?


MD Nuruzzaman প্রকাশের সময় : মে ২৬, ২০২৩, ৩:৫৯ অপরাহ্ন /
বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতির পেছনে কারণ কি?

 

বাংলাদেশের সুষ্ঠু নির্বাচনে কেউ বাধা দিলে ওই ব্যক্তি ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞার যে হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, তা নিয়ে এখন আলোচনা তুঙ্গে। কিন্তু নির্বাচনের আট মাস আগেই যুক্তরাষ্ট্র কেন এ ধরনের হুঁশিয়ারি দিল? কেউ কেউ একটু এগিয়ে এমন প্রশ্নও করছেন—বাংলাদেশে একটি অবাধ-সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক নির্বাচন দেখার আকাঙ্ক্ষা থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত, নাকি এর পেছনে আরও কোন গভীর ‘কৌশলগত’ হিসেব-নিকেশও আছে?

বাইডেনের দৃষ্টিভঙ্গি

 

ওয়াশিংটনভিত্তিক উইলসন সেন্টারের সাউথ এশিয়ান ইন্সটিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান বিবিসি বাংলাকে বলেন, এটা বেশ কঠোর একটা সিদ্ধান্ত, এবং এখানে একটা খুবই স্পষ্ট বার্তা দেয়া হয়েছে। মার্কিন প্রশাসন এখন দেখবে নির্বাচন ঘনিয়ে এলে সেখানে কী ঘটে।

‘আমার মনে হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন গণতন্ত্র প্রসারের যে এজেন্ডা নিয়েছে— তাতে বাংলাদেশকে একটা দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে; অর্থাৎ বাইডেন প্রশাসন একটা মূল্যবোধ-ভিত্তিক পররাষ্ট্রনীতিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে এবং বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তা জোরালোভাবে প্রয়োগ করছে।

একই কথা বলেছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো ড. আনু আনোয়ার। বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, ‘ বাংলাদেশের ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়েও অনেক প্রশ্ন উঠেছিল—কিন্তু সে সময় যুক্তরাষ্ট্র এরকম কোন ভূমিকাই নেয়নি। কারণ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতি মূল্যবোধ-ভিত্তিক ছিল না।

 

‘কিন্তু বাইডেনের পররাষ্ট্রনীতি মূল্যবোধ-ভিত্তিক এবং গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকে তারা অগ্রাধিকারের তালিকায় এক নম্বরে রেখেছে।’

ড. আনোয়ারের মতে নতুন ভিসা নীতিকে এ প্রেক্ষাপটে ব্যাখ্যা করাটাই সবচেয়ে সঠিক হবে। তবে বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে বাইডেন প্রশাসনের ধারণা খুব উচ্চ নয় বলে মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রনিবাসী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই শিক্ষক-গবেষক।

‘বাইডেন সরকার যদি বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক শাসন আছে বলে মনে করতো – তাহলে নিশ্চয়ই ডেমোক্রেসি সামিটে ঢাকা আমন্ত্রিত হতো,’ বিবিসি বাংলাকে বলেন ড. আনু আনোয়ার।

উইলসন সেন্টারের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘গত বেশ কিছুকাল ধরেই আমরা দেখছি বাইডেন প্রশাসন বাংলাদেশের সরকারের ক্র্যাকডাউনের সমালোচনা করেছে, র‍্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।’

‘এখন দেখা যাচ্ছে যে কূটনৈতিক পন্থার বাইরে গিয়ে তারা প্রয়োজনে ‘শাস্তিমূলক পদক্ষেপ’ নিতেও ইচ্ছুক, এবং অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন, গণতন্ত্র ও অধিকার নিশ্চিত করতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতেও প্রস্তুত,’ বলেন কুগেলম্যান।