নিজের লাভ হবে, তাই বিমানকে লোকসানে ফেললেন কর্মকর্তা


MD Nuruzzaman প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ২৬, ২০২৩, ৪:৫০ অপরাহ্ন /
নিজের লাভ হবে, তাই বিমানকে লোকসানে ফেললেন কর্মকর্তা

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের রাজস্ব ও ফ্লাইট ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এফএমআইএস) বিভাগের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. মিজানুর রশীদ। তার মূল দায়িত্ব প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব বৃদ্ধি করা এবং ব্যয় কমানো। তিনি করেছেন ঠিক তার উল্টোটা। মিথ্যা তথ্য দিয়ে অকার্যকর দুটি সফটওয়্যার কিনে বিমানের রাজস্ব কমিয়েছেন তিনি, বাড়িয়েছেন ব্যয়। এ কারণে বিমানকে গচ্ছা দিতে হয়েছে ৫ কোটি টাকার বেশি।

ইচ্ছাকৃতভাবে প্রতিষ্ঠানকে লোকসানের মুখে ফেলার অভিযোগে জিএম মিজানুর রশীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস।

বিমান সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের আগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের মাইক্রোসফট এক্সেলের ফাংশন ব্যবহার করে নিজস্ব পদ্ধতিতে উদ্ভাবিত প্রোগ্রাম ‘রুট কস্টিং’ (বিভিন্ন রুটের ফ্লাইট পরিচালনার মোট খরচ) এবং ‘রুট প্রফিটিবিলিটি’ (লাভসহ বিভিন্ন রুটের ভাড়া নির্ধারণ) প্রস্তুত করত। এ দুই কাজের জন্য জিএম মিজানুর রশীদ নিজের একক সিদ্ধান্তে এফপিএস এবং ফিনেস কস্ট অ্যান্ড বাজেট নামে নতুন দুটি সফটওয়্যার কেনেন। এক্ষেত্রে তিনি বিমানের ক্রয়নীতি লঙ্ঘন করেন। এছাড়া এ বিষয়ে বিমান পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনও নেননি তিনি।

মিজানুর রশীদের বিরুদ্ধে গত ১৭ জানুয়ারি বিভাগীয় মামলা করে বিমান। মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, মিজানুর রশীদ বিমানের সফটওয়্যার ক্রয়ের জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিমানের ক্রয়নীতি লঙ্ঘন করেছেন। বিমানে কোনো সফটওয়্যার কেনার আগে তার বিকল্প সফটওয়্যার কী কী আছে, সেগুলোর বিষয়ে আরএফপি (রিক্যুয়েস্ট ফর প্রপোজাল) দিতে হয়। সেটি তিনি দেননি। এছাড়া তিনি বিমানের আইটি বিভাগ বা অন্য কোনো কমিটির পরামর্শ না নিয়ে ইন্টারফেস কস্ট সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ করেন। প্রোটকল অনুযায়ী কোনোকিছু ক্রয়ের আগে যেসব কর্মকর্তার মতামত নিতে হয় তাদের সবার মতামতও নেননি তিনি।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, অসত্য, মিথ্যা, মনগড়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে বিমান ব্যবস্থাপনাকে ভুল পথে পরিচালিত করে এবং বিমান ক্রয় নীতিমালা যথাযথ অনুসরণ না করে অসঙ্গতিপূর্ণ প্রশাসনিক আদেশ উপস্থাপনের মাধ্যমে সফটওয়্যার ২টি ক্রয় করায় বিমান বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়, যার দায় তিনি এড়াতে পারেন না।

এতে আরও বলা হয়, মিজানুর রশীদ ব্যক্তিগত ভাবে আর্থিক সুবিধা আদায়ের জন্য সফটওয়্যার কেনার দরপত্র আহ্বানের বিষয়টি বিমানের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের কাছে গোপন রেখে সরাসরি মেসার্স অ্যাকেলয়া কেল সলিউশন লিমিটেডের সঙ্গে ক্রয়চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছেন।

এ ঘটনার তদন্ত সংশ্লিষ্টরা গণমাধ্যমকে জানান, নতুন দুই সফটওয়্যার কেনার আগে বিমান তার নিজস্ব পদ্ধতিতে অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে বাজেটিং ও প্রফিটিবিলিটি নির্ধারণ করত। নতুন সফটওয়্যার কেনার কারণে বিমানের খরচ বেড়ে গেছে এবং রাজস্ব অনেকাংশে কমে গেছে।