গণ-অবস্থান কর্মসূচিতে যা বললেন মির্জা ফখরুল


MD Nuruzzaman প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ১১, ২০২৩, ১২:৪৮ অপরাহ্ন /
গণ-অবস্থান কর্মসূচিতে যা বললেন মির্জা ফখরুল

 

নীলাকাশ টুডেঃ

পুলিশ ও আমলাদের ওপর নির্ভর করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণ-অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা বিভাগীয় বিএনপির উদ্যোগে সকাল ১০টার দিকে এই গণ-অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়ে দুপুর ২টা ১০ মিনিটে শেষ হয়।

 

‘ফ্যাসিস্ট, দুর্নীতিবাজ, গণতন্ত্র হরণকারী সরকারের পদত্যাগ, অবৈধ সংসদ বাতিল, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, ১০ দফা দাবি ও দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ রাজবন্দীদের মুক্তির দাবি’তে এ গণ-অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ নিজেকে রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচয় দেয়। আমরাও জানি, আওয়ামী লীগ পুরোনো পরিচিত দল। কিন্তু আওয়ামী লীগ এখন সম্পূর্ণভাবে তার রাজনৈতিক অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছে। তারা এখন গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সেজন্য এখন তাদেরকে পুলিশ ও আমলাদের ওপর নির্ভর করে রাষ্ট্রক্ষমতাকে জোর করে দখল করে রাখতে হচ্ছে।

আন্দোলন শুরু হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আজকে নয় এই আন্দোলন শুরু হয়েছে যখন এ সরকার বেআইনিভাবে দুই-দুইবার ভোট ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে।

 

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, এই সরকার দেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। আমরা কি সেটি হতে দেবো? তখন প্রতিউত্তরে কর্মীরা বলেন, না। আবার তিনি বলেন, আমরা কি এখানে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠিত হতে দেবো? কর্মীরা বলেন, না। তখন ফখরুল বলেন, সেজন্য আমাদের আরও বেশি করে জেগে উঠতে হবে। আপনারা জেগে উঠেছেন। বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে। এখন সমস্ত মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে তাদেরকে জাগিয়ে তুলে আমাদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।

গণ-অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সুসংবাদ হচ্ছে এটাই যে, আজকে বাংলাদেশের বিশিষ্ট নাগরিক ও সুশীল সমাজ এগিয়ে আসতে শুরু করেছেন। আজকে যে অন্যায় হচ্ছে তার বিরুদ্ধে তারা (বাংলাদেশের বরেণ্য নাগরিক) ৬০ জন বিবৃতি দিয়েছেন। তাদের আমি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই।

সরকার জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দাবি করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ একটা দেউলিয়া রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। আর এই সরকার সম্পূর্ণভাবে দুর্নীতিপরায়ণ, জনবিচ্ছিন্ন ও নির্যাতনকারী সরকার হিসেবে বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতাকে দখল করে রেখেছে।

চলমান এই আন্দোলনে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫ জন নিহত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমি তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। ফরিদপুরে যে গণ-অবস্থান কর্মসূচি চলছিল, সেখানে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ কর্মীরা হামলা করে সেই মিটিং পণ্ড করে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। পুলিশ গুলি চালিয়েছে, অনেক লোকজন আহত হয়েছে। আর ময়মনসিংহে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ হামলা করেছে।

কর্মসূচির শুরুতেই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা উদ্যোগে দলীয় সংগীত ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ’ গান পরিবেশন করা হয়।

এর আগে সকাল ৯টার পর থেকে রাজধানী ও আশপাশের জেলা থেকে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলসহ অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ছোট-ছোট মিছিল নিয়ে নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে আসতে শুরু করেন। গণ-অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিতে আসা নেতাকর্মীদের উপস্থিতি বিএনপির কার্যালয় থেকে পূর্ব দিকে ফকিরাপুল ও পশ্চিম দিকে নাইটিংগেল মোড় ছাড়িয়ে যায়। তাদের হাতে ছিল কারাবন্দি নেতাদের মুক্তি চেয়ে ব্যানার, ফেস্টুন, জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা।

অবস্থান কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, ডা. জাহিদ হোসেন, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদসহ আরও অনেকে।