ডাব কেনাবেচায় সব পর্যায়ে পাকা রসিদ রাখতে হবে। কোনোভাবে ন্যায্যমূল্যের বেশি দামে ডাব বিক্রি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এএইচএম সফিকুজ্জামান।
সোমবার অধিদপ্তরের সভাকক্ষে ডাবের পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
সফিকুজ্জামান বলেন, ডেঙ্গুবিস্তারের সুযোগ নিয়ে হঠাৎ করেই ডাবের দাম দ্বিগুণ বেড়েছে। অসহায় রোগীদের জিম্মি করে ডাব ব্যবসায়ীদের অনৈতিক এই অতিমুনাফা কোনো যুক্তিতেই গ্রহণযোগ্য নয়। ২৪ আগস্ট গভীর রাতে কাওরান বাজার আড়তে অভিযান চালিয়ে পাইকারি পর্যায়ে ডাবের সর্বোচ্চ মূল্য প্রকারভেদে ৪০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে পাওয়া গেছে। অর্থাৎ সবচেয়ে ভালোমানের ডাব খুচরায় সর্বোচ্চ ১০০ টাকার বেশি হতে পারে না, যা দ্বিগুণে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি ডাবের কেনাবেচায় কোনো রকম পাকা ভাউচার কিংবা ক্রয়-বিক্রয় রসিদ রাখা হয় না। এ সুযোগে ডাবের আড়তে পাইকারি, খুচরা প্রতিটি স্তরে মূল্যবৃদ্ধির এক মহোৎসব চলছে।
সফিকুজ্জামান বলেন, ব্যবসা করলে অবশ্যই লাভ করবেন। তবে একটা উপলক্ষ্য সামনে এনে দাম বাড়িয়ে দেবেন সেটা হতে পারে না। ৪০০ টাকা দিয়ে বাংলাদেশে দুটি ডাব কিনতে হবে, আমরা কি সেই পর্যায়ে পৌঁছে গেছি? ডাব তো আর জাহাজে করে বিদেশ থেকে ইমপোর্ট করতে হয় না। কিংবা ডলারে পেমেন্ট করে আনতে হয় না। তাহলে দাম এত বাড়বে কেন? ডেঙ্গুকে পুঁজি করে আপনারা প্রতিটি বাজার জিম্মি করছেন। এভাবে চলতে পারে না। আমি ভাবতে পারিনি ডাবের জন্য আমাকে এখানে বৈঠক করতে হবে।
তিনি বলেন, আমি আমার কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়ে দেব, তারা সারা দেশের বাজারে গিয়ে দেখবে আপনাদের ট্রেড লাইসেন্স আছে কি না, টিন নম্বর আছে কি না তা দেখবে। আপনারা ভ্যাট-ট্যাক্স ঠিকঠাক দিচ্ছেন কি না। আপনারা অবশ্যই আপনাদের ভাউচার রাখবেন। যাদের ভাউচার নেই তাদের বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় দেওয়া হবে। এর মধ্যে আপনারা এটি করে নেবেন। আর যতক্ষণ খুচরা মূল্য ১০০ টাকার মধ্যে না আসবে, আমরা ততক্ষণ মনিটরিং জোরদার রাখব। তাই মঙ্গলবার থেকেই ডাব ব্যবসায়ীদের অবশ্যই পাকা রসিদ সংগ্রহে রাখতে হবে। তা না হলে অভিযানে ধরা পড়লে জরিমানাসহ কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।
ক্যাব সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর ভুঁইয়া বলেন, বাংলাদেশের বাজারে ৮০ শতাংশ ব্যবসায়ী অসৎ। এটা কীভাবে হতে পারে?
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের লজ্জা নেই। আপনারা দেশের বারোটা বাজাচ্ছেন। ভোক্তাদের বারোটা বাজাচ্ছেন। দয়া করে আপনারা এটা করবেন না। তিনি বলেন, বাজারে গিয়ে মানুষ কিছু কিনতে পারছে না। যদি ভোক্তারা মরে যায়, তাহলে আপনাদের ব্যবসা থাকবে না।