নীলাকাশ টুডেঃ এখন থেকে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ আদায়ের জন্য কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনার মামলা করতে পারবে না বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ আদায়ের জন্য শুধুমাত্র ২০০৩ সালের অর্থঋণ আইনের বর্ণিত উপায়ে অর্থঋণ আদালতে মামলা করতে পারবে। পাশাপাশি বর্তমানে আদালতে চলমান ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়ের করা সব চেক ডিজঅনার মামলার কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলে রায়ে বলা হয়েছে।
ঋণ আদায়ের জন্য এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্র্যাক ব্যাংকের চেক ডিজঅনার মামলা বাতিল করে বুধবার (২৩ নভেম্বর) বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
রায়ে আদালত বলেছেন, ব্যাংক ঋণের বিপরীতে যে চেক নিচ্ছে সেটা জামানত। বিনিময়যোগ্য দলিল নয়। জামানত হিসেবে রাখা সেই চেক দিয়ে চেক ডিজঅনার মামলা করা যাবে না।
আদালত বলেন, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ একটি চুক্তির মাধ্যমে নেওয়া হয়ে থাকে। ব্যাংকের কিছু দুর্নীতিবাজ, অসাধু কর্মকর্তা নিজেদের স্বার্থে, তাদের হিডেন এজেন্ডা বাস্তবায়নে চেকের অপব্যবহার করে মামলা করে থাকে। তাদের ব্যবহার দাদন ব্যবসায়ীদের মতো।
আদালত বলেন, ঋণের বিপরীতে ব্ল্যাংক চেক নেওয়াটাই বেআইনি। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন ধরে এই বেআইনি কাজ করে আসছে।
রায়ে হাইকোর্ট নিম্নআদালতের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে বলেন, আজ থেকে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান যদি চেক ডিজঅনার মামলা করে তাহলে আদালত তা সরাসরি খারিজ করে দেবেন। একইসঙ্গে তাদেরকে ঋণ আদায়ের জন্য অর্থঋণ আদালতে পাঠিয়ে দেবেন।
আদালত বলেন, ব্যাংক হওয়ার কথা ছিল গরিবের বন্ধু, কিন্তু তা না হয়ে ব্যাংক ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান গরিবের রক্ত চুষছে। এটা হতে পারে না। যারা হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে খেলাপি হচ্ছে ব্যাংক তাদের ঋণ মওকুফ করার কথা শুনি। কিন্তু কোনো গরিবের ঋণ মওফুফ করার কথা কোনোদিন শুনিনি। নীলকর চাষিদের মতো, দাদন ব্যবসায়ীদের মতো যেনতেন ঋণ আদায় করাই তাদের লক্ষ্য। লোন আদায়ের জন্য অর্থঋণ আইনে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান মামলা দায়ের না করে চেক ডিজঅনার মামলা করছে। এ কারণে আমাদের ক্রিমিনাল সিস্টেম প্রায় অকার্যকর হয়ে গেছে। তাই এখন থেকে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র অর্থঋণ আদালতে মামলা দায়ের করতে পারবে। অন্যকোনো আইনে নয়।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি হাইকোর্টের রায়ের আলোকে নির্দেশনা জারি করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনরকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
প্রকাশক ও সম্পাদক : মোঃ নূরুজ্জামান, মফস্বল সম্পাদক : ডাঃ জি এম শফিকুল ইসলাম ॥ প্রধান কার্যালয় : নুরনগর বাজার, নুরনগর - ৯৪৫১, শ্যামনগর, সাতক্ষীরা। মোবাঃ ০১৯৫৬-৬৯৫৯৮১, বিজ্ঞাপন : ০১৮৮৫-১৭৫৬৮০, Email : nilakashtoday@gmail.com, Web : www.nilakashtoday.com
নীলাকাশ টুডে ডটকম © ২০২৩ - সর্বস্ত্ব সংরক্ষত